শেয়ার বাজার

চাল-ডাল-আটা-ময়দা-মসলাসহ কিছু নিত্যপণ্যের দাম চড়া

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: বৃহঃস্পতিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৩

চাল-ডাল-আটা-ময়দা-মসলাসহ কিছু নিত্যপণ্যের দাম চড়া

বাজারে বেশকিছু পণ্যের দাম বেড়েছে। এর মধ্যে চিনির দাম বেড়েছে সবচেয়ে বেশি। এছাড়া  চাল, ডাল, আটা, ময়দা, মসলাসহ প্রায় সব নিত্যপণ্যের দাম।

শুক্রবার (২৪ নভেম্বর) রামপুরা মালিবাগ কারওয়ান বাজারসহ কয়েকটি বাজার ও মুদি দোকান ঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্র। তবে বাজারে সবজির দাম কিছুটা কম দেখা গেছে। নিম্নমুখী আছে মুরগি ও ডিমের দাম।

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, খোলা বাজারে খোলা সাদা চিনি বিক্রি হচ্ছে কেজি ১৪৫ থেকে ১৫০ টাকায়। আর প্যাকেজাত সাদা চিনি ১৬৫ থেকে ১৭০ টাকায়। এসব চিনির দাম কয়েক সপ্তাহ আগে ১৪০ টাকার মধ্যে ছিল।

রামপুরা এবি স্টোরের কালাম হোসেন বলেন, কোম্পানি তারপরও চিনি দিচ্ছে না। তারাই সংকট লাগিয়ে রেখে দাম বাড়াচ্ছে।

এদিকে, মুদি দোকানে চলতি মাসের শুরুতে মসুর ডালের দাম কেজিতে ৫ টাকা বেড়েছিল। মাঝে কয়েক দিন কমে আবার বেড়েছে এখন। বর্তমানে মোটা দানার ডালের কেজি ১১০ থেকে ১২০ এবং ছোট দানার ১৪০ থেকে ১৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া খোলা আটা ৪৮ থেকে ৫০ টাকা আর খোলা ময়দা ৬৫ থেকে ৭৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। যা গত সপ্তাহের তুলনায় ৫ টাকা বেশি।

অন্যদিকে, খুচরা বাজারে আলু এখনও ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। মানভেদে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৩০ টাকায় আর আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকায়।পাশাপাশি মানভেদে দেশি রসুন বিক্রি হচ্ছে কেজি ২৩০ থেকে ২৫০ টাকায়, আমদানি রসুন ২০০ থেকে ২২০ টাকায়। আমদানি করা আদা ২২০ বিক্রি হচ্ছে।

মসলা জাতীয় পণ্য বিক্রেতা ফারুক আহমেদ বলেন, আদা রসুনের দাম বেড়েছে। তবে পেঁয়াজ আগের দামে বিক্রি হচ্ছে।

বাজারভেদে ফার্মের মুরগির ডিম বিক্রি হচ্ছে ডজন ১২০ থেকে ১৩৫ টাকায়। ব্রয়লার মুরগির কেজি ১৭০-১৯০ টাকা।

এছাড়া মানভেদে বিআর আটাশের চাল ৫৬ থেকে ৬০ টাকা, মানভেদে মিনিকেট চাল ৭০ থেকে ৭২ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।

চালের দাম বৃদ্ধির কারণ জানতে চাইলে বুলু রাইস স্টোরের স্বত্তাধিকারী বুলু মিয়া বলেন, বিআর আটাশ চালের দাম কেজিতে চার টাকা বাড়ছে। নাজিরেও বাড়ছে চার টাকা আর মিনিকেটে বাড়ছে দুই টাকা। কয়েক বছর থেকে ধান কাটা-মারির মৌসুমে আর চালের দাম কমে না। এখন অব সিজনে দাম কমে। সিজন সময়ে আগে কমতো।

তবে বাজারের সবজির দাম কমে প্রায় অধিকাংশ সবজি ৫০ থেকে ৬০ টাকার মধ্যে বিক্রি হতে দেখা গেছে।

Dummy Ad 1

স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক পরিচালনা পর্ষদের নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান হলেন জাহেদুল হক 

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ০৩ এপ্রিল, ২০২৪

স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক পরিচালনা পর্ষদের নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান হলেন জাহেদুল হক 

স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের ৩৮৯তম পর্ষদ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত রবিবার এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় ব্যাংক পরিচালনা পর্ষদের নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান হলেন শরিয়াহ্ ভিত্তিক স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক পিএলসি.-এর পরিচালক, চট্টগ্রামের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও সমাজ সেবক মো. জাহেদুল হক।

জাহেদুল হক চট্টগ্রামের বোয়ালখালী থানাধীন পশ্চিম শাকপুরা গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি চট্টগ্রাম কলেজিয়েট হাই স্কুল থেকে ১৯৮৫ সালে এসএসসি এবং চট্টগ্রাম সরকারি কমার্স কলেজ থেকে ১৯৮৭ সালে এইচএসসি পাশ করেন। ১৯৯২ সালে তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নর্থইস্ট লুইসিয়ানা ইউনিভার্সিটি থেকে বিবিএ সম্পন্ন করেন।

চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্সের প্রাক্তন পরিচালক, বাংলাদেশ গার্মেন্টস্ ম্যানুফ্যাকচারিং অ্যান্ড এক্সপোর্ট অ্যাসোসিয়েশন (বিজিএমইএ) এর প্রাক্তন সদস্য, চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জ ট্রেড অ্যান্ড কমার্স ও খাতুনগঞ্জ ট্রেড অ্যান্ড ফাইন্যান্স ইন্ডাস্ট্রিজ এর সহ সভাপতি জনাব মো. জাহেদুল হক সততা, যোগ্যতা ও পেশাদারিত্বের মাধ্যমে দ্রুত সফলতার শীর্ষে আরোহণ করেন। পেশাগত জীবনে তিনি মেসার্স জাহেদ ব্রাদার্স এর প্রোপ্রাইটর এবং মেসার্স নূর অয়েল অ্যান্ড ফুড প্রোডাক্টস্ ও মেসার্স আরাফাত লিমিটেডের পরিচালক।

মানবহিতৈষী, সকলের প্রিয় ব্যক্তিত্ব জাহেদুল হক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের সাথে সম্পৃক্ত। তিনি বোয়ালখালী হাজী মো. নুরুল হক ডিগ্রী কলেজ, শাকপুরা, চট্টগ্রাম- এর গভর্নিং বডির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য; চট্টগ্রাম রাইজিং স্টার ক্লাবের এক্সিকিউটিভ কমিটির চেয়ারম্যান, আর্মি গল্ফ ক্লাব ঢাকা, চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতাল এবং চট্টগ্রাম হার্ট ফাউন্ডেশনের আজীবন সদস্য; চট্টগ্রাম বোট ক্লাব, চট্টগ্রাম ক্লাব লিমিটেড, চট্টগ্রাম কলেজিয়েট ক্লাব এবং চট্টগ্রাম সিনিয়রস্' ক্লাব লিমিটেডের স্থায়ী সদস্য। এছাড়াও তিনি আমেনিয়া ফোরকানিয়া নূরীয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানার প্রতিষ্ঠাতা এবং চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থার কাউন্সিলর।


আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২০ জানুয়ারি, ২০২৪

আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী

JlecBD ডেস্ক: ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলার (ডিআইটিএফ) উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রোববার (২১ জানুয়ারি) সকাল ১০টায় ৩৫ মিনিটে মেলাপ্রাঙ্গণে উপস্থিত হন তিনি। বাণিজ্যমেলার উদ্বোধন করবেন তিনি।

রপ্তানি বাণিজ্য উন্নয়নের অন্যতম প্রধান কৌশল হচ্ছে পণ্য উন্নয়ন ও পণ্যের বহুমুখী বাজার সৃষ্টিকরণ। আর পণ্যের বাজার সৃষ্টিকরণের অন্যতম প্রধান কৌশল হচ্ছে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা আয়োজন ও মেলায় অংশগ্রহণ। দেশীয় পণ্যের প্রচার, প্রসার, বিপণন ও উৎপাদনে সহায়তার পাশাপাশি কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির উদ্দেশ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর যৌথ উদ্যোগে ১৯৯৫ সাল থেকে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা আয়োজন করা হচ্ছে।

মেলার ২৫টি পর্ব আয়োজিত হয়েছে শের-ই-বাংলা নগরের উন্মুক্ত মাঠে। প্রধানমন্ত্রীর দিকনির্দেশনায় বাণিজ্যমেলার জন্য নির্মিত স্থায়ী ভেন্যু বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী এক্সিবিশন সেন্টারে (বিবিসিএফইসি) ডিআইটিএফ-২০২২ আয়োজনের মধ্য দিয়ে দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য উন্নয়ন ও সম্প্রসারণে যুক্ত হয়েছে এক নতুন মাত্রা। এই স্থায়ী মেলা কমপ্লেক্সে তৃতীয়বারের মতো হচ্ছে ২৮তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা-২০২৪। চীনের অর্থায়নে পূর্বাচলে স্থায়ী বাণিজ্যমেলা কেন্দ্র গড়ে তোলা হয়েছে। এখন থেকে প্রতি বছর এখানেই আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলার আসর বসবে।

ইপিবি জানিয়েছে, এবারের বাণিজ্যমেলায় দেশীয় পণ্যের পাশাপাশি ভারত, পাকিস্তান, তুরস্ক, ইরান, হংকং, ইন্দোনেশিয়া, সিঙ্গাপুরসহ বিভিন্ন দেশ অংশ নেবে। মেলায় এসব দেশের বস্ত্র, মেশিনারিজ, কার্পেট, কসমেটিকস অ্যান্ড বিউটি এইডস, ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিকস, ফার্নিচার, পাট ও পাটজাত পণ্য, গৃহসামগ্রী, চামড়া/আর্টিফিসিয়াল চামড়া ও জুতাসহ চামড়াজাত পণ্য, স্পোর্টস গুডস, স্যানিটারি ওয়্যার, খেলনা, স্টেশনারি, ক্রোকারিজ, প্লাস্টিক, মেলামাইন পলিমার, হারবাল ও টয়লেট্রিজ, ইমিটেশন জুয়েলারি, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, ফাস্টফুড, হস্তশিল্পজাত পণ্য, হোম ডেকর ইত্যাদি পণ্য মেলায় প্রদর্শিত হবে। পণ্য প্রদর্শনের পাশাপাশি দেশীয় পণ্য রপ্তানির বড় বাজার খোঁজার লক্ষ্য রয়েছে। আগের মতো মেলাটি মাসব্যাপী সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত চলবে। আর সাপ্তাহিক ছুটির দিন চলবে রাত ১০টা পর্যন্ত।

এবার মেলায় যাতায়াতের সুবিধার জন্য মেট্রোরেল ও এলিভেটেট এক্সপ্রেসওয়ের সঙ্গে সংযুক্ত করতে ফার্মগেট থেকে বাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে। যাতে উত্তরা বা মতিঝিল থেকে যারা মেলায় আসবেন তারা মেট্রোরেল এসে ফার্মগেট থেকে বাসে এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে সোজা মেলায় চলে আসতে পারেন সেই সুবিধা রাখা হয়েছে। এছাড়াও সাধারণ দর্শনার্থীদের সুবিধার্থে কুড়িল বিশ্বরোড থেকে মেলা পর্যন্ত বিআরটিসি ও কয়েকটি যাত্রীবাহী বাসের ডেডিকেটেড সার্ভিসের ব্যবস্থা করা হয়েছে। মেলা চলাকালীন এ বাস সার্ভিস চালু থাকবে। এবারের বাণিজ্যমেলার লে-আউট প্ল্যান (সংশোধিত) অনুযায়ী বিভিন্ন ক্যাটাগরির প্যাভিলিয়ন, রেস্টুরেন্ট ও স্টলের মোট সংখ্যা ৩৫১টি।

মেলার সার্বিক নিরাপত্তা এবং আগত দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণার্থে মেলাপ্রাঙ্গণে পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন ও র্যাব নিয়োজিত থাকবে। এছাড়া সার্ভিস গেট ও ভিআইপি গেটের শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য প্রাইভেট সিকিউরিটি গার্ড নিয়োগ করা হয়েছে। নিরাপত্তা অগ্রাধিকার বিবেচনায় মেলাপ্রাঙ্গণের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থান, প্রবেশপথ, পার্কিং এরিয়া এবং সংশ্লিষ্ট সব এলাকায় প্রয়োজনীয় সংখ্যক সিসিটিভি স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া মেলার প্রবেশপথে প্রয়োজনীয় সংখ্যক আর্চওয়ে ও মেটাল ডিটেক্টরের ব্যবস্থা করা হয়েছে। একইভাবে যে কোনো ধরনের অগ্নিদুর্ঘটনা প্রতিরোধে মেলায় সার্বক্ষণিক নিয়োজিত থাকবে ফায়ার ব্রিগেড।

মেলার সার্বিক কার্যক্রম মনিটরিংয়ের জন্য মেলায় স্থাপন করা হয়েছে একটি অস্থায়ী সচিবালয়। দর্শনার্থীদের সব প্রকার তথ্য প্রদানের জন্য রয়েছে একটি তথ্যকেন্দ্র। ব্যাংকিং সার্ভিসের জন্য মেলায় থাকছে ডাচ্-বাংলা ও ইসলামী ব্যাংকের একাধিক বুথ। এছাড়া মেলায় থাকছে বাংলাদেশ ব্যাংক ও সোনালী ব্যাংকের সার্ভিস বুথ। মেলায় প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার বিষয়টিও নিশ্চিত করা হয়েছে। মা ও শিশুদের কথা বিবেচনা করে মেলায় স্থাপন করা হয়েছে দুটি মা ও শিশুকেন্দ্র। অন্যান্য প্রয়োজনীয় সেবার মধ্যে রক্ত সংগ্রহ কেন্দ্র, মসজিদ, নিউট্রিশন অ্যান্ড অটিজম সেবা, দর্শনার্থীদের বিশ্রামের জন্য আরামদায়ক ও শোভন চেয়ার বেঞ্চ ইত্যাদির ব্যবস্থা করা হয়েছে।

বঙ্গবন্ধুর জীবন ও আদর্শ, স্বাধীনতা সংগ্রাম, উন্নত শিল্প সমৃদ্ধ-সোনার বাংলা বিনির্মাণে তার অবদান ও ভাবনা, দেশের উন্নয়ন ইত্যাদিকে প্রক্ষেপণ করে এবারের বঙ্গবন্ধু প্যাভিলিয়ন অধিকতর নান্দনিক, ভাবগাম্ভীর্য ও অর্থপূর্ণভাবে নির্মাণ করা হয়েছে। যেখানে রয়েছে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস, স্বাধিকার আন্দোলন ও স্বাধীনতা সংগ্রামে বঙ্গবন্ধুর অবদান, বঙ্গবন্ধুর বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবন ও আদর্শের বিভিন্ন দিক ছাড়াও যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশকে উন্নয়নের ধারায় এগিয়ে নেওয়ার প্রকৃত ইতিহাস সবার কাছে বিশেষ করে নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরারও প্রয়াস নেওয়া হয়েছে। এছাড়া বঙ্গবন্ধু প্যাভিলিয়নের ভেতরে বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্মভিত্তিক বিভিন্ন আলোকচিত্র প্রদর্শন ছাড়াও সম্পর্কিত বই এবং তার জীবন ও কর্মভিত্তিক ডকুমেন্টারি প্রদর্শনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।


সর্বজনীন পেনশন: কত টাকা জমা দিলে কত টাকা পাবেন?

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২৩ আগস্ট, ২০২৩

সর্বজনীন পেনশন: কত টাকা জমা দিলে কত টাকা পাবেন?

বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো চালু হল সর্বজনীন পেনশন স্কিম। সে স্কিমের আওতায় সরকারি চাকুরীজীবী ব্যতীত দেশের সকল নাগরিক পেনশন সুবিধার অন্তর্ভুক্ত হল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্বোধনের পর এটির আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়েছে। অর্থাৎ কারো বয়স ১৮ বছরের বেশি হলেই এখন অনলাইনে এটিতে নিবন্ধন করতে পারবেন।

উদ্বোধনের সময় শেখ হাসিনা বলেন, “আমাদের যারা সরকারি চাকুরিজীবী তারা তো পেনশন পান, কিন্তু যারা চাকরি করেন না তারা তো পান না, কাজেই এটা সরকারি চাকরিজীবিদের জন্য না। তার বাইরে যে জনগোষ্ঠী তাদের জন্য এই ব্যবস্থা। ”

তবে সরকারের নতুন চালু করা এই সর্বজনীন পেনশন স্কিম নিয়ে আছে নানা প্রশ্ন, আলোচনা। কারা, কীভাবে এতে যুক্ত হতে পারবেন, সুবিধা কী, কত টাকা দিতে হবে ইত্যাদি।

অর্থ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব গোলাম মোস্তফা বিবিসি বাংলাকে বলেন, পেনশন স্কিম উদ্বোধনের পর থেকে অনেক সাড়া পাওয়া যাচ্ছে।

"প্রচুর লোক ওয়েবসাইটে ঢুকছে। উদ্বোধনের পরপরই একসাথে ১১০০/১২০০ লোক আমাদের প্ল্যাটফর্মে আসেন," বলেন মি. মোস্তফা।

কাদের জন্য এই স্কিম?

জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ বলছে , দেশের সর্বস্তরের জনগণকে সুবিধা দিতে এই পেনশন ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। বিশেষ করে, গড় আয়ু বৃদ্ধির কারণে বয়স্ক জনগোষ্ঠীর সংখ্যা বাড়ছে। ফলে তাদের সামাজিক নিরাপত্তা দেবে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা।

জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী ১৮ থেকে ৫০ বছর বয়সী সকল শ্রেণী পেশার বাংলাদেশি নাগরিক এই স্কিমে অংশ নিতে পারবে। অর্থাৎ সর্বজনীন পেনশন স্কিমের অংশ হতে হলে জাতীয় পরিচয়পত্র আবশ্যক।

তবে ব্যতিক্রম আছে প্রবাসী বাংলাদেশীদের জন্য, যাদের জাতীয় পরিচয়পত্র নেই তারা চাইলে পাসপোর্ট দিয়েও নিবন্ধন করতে পারবেন, কিন্তু সেক্ষেত্রে দ্রুততম সময়ের মধ্যে জাতীয় পরিচয়পত্র সংগ্রহ করে তার কপি জমা দিতে হবে।

আবার বয়সের ক্ষেত্রেও বিশেষ বিবেচনা রাখা হয়েছে। যাদের বয়স ৫০ পেরিয়ে গেছে তারাও সর্বজনীন পেনশন স্কিমে অংশ নিতে পারবেন। কিন্তু সেক্ষেত্রে তিনি পেনশন পাবেন টানা ১০ বছর চাঁদা দিয়ে যাওয়ার পর।

অর্থাৎ স্কিম অনুযায়ী ব্যক্তির বয়স ৬০ বছর হলেই তিনি সরকার থেকে পেনশন পেতে শুরু করবেন, তাকে আর চাঁদা দিতে হবে না। কিন্তু কেউ যদি ৫৫ বছর বয়সে এসে স্কিমে অংশ নেন তাহলে ৬৫ বয়স বয়স থেকে তিনি পেনশন পেতে শুরু করবেন।

সরকার মোট ৬টি স্কিমের কথা ঘোষণা করেছে। তবে আপাতত চালু হয়েছে চারটি স্কিম। এগুলোর নাম দেয়া হয়েছে প্রবাস, প্রগতি, সুরক্ষা ও সমতা।

প্রবাস

এটি শুধু বিদেশে কর্মরত বা অবস্থানকারী বাংলাদেশি নাগরিকের জন্য। এর মাসিক চাঁদার হার ধরা হয়েছে ৫ হাজার, সাড়ে ৭ হাজার ও ১০ হাজার টাকা করে। ব্যক্তি চাইলে এই চাঁদার সমপরিমাণ অর্থ তিনি যে দেশে আছেন সে দেশের মুদ্রায় দিতে পারবেন। আবার দেশে এসে দেশীয় মুদ্রাতেও দিতে পারবেন। এছাড়া প্রয়োজনে প্রবাস স্কিম পরিবর্তনেরও সুযোগ থাকছে।

প্রগতি

এই স্কিম বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের জন্য। এক্ষেত্রেও তিন ভাগে চাঁদার হার ভাগ করা হয়েছে। কেউ চাইলে মাসে ২ হাজার, ৩ হাজার বা ৫ হাজার টাকা করে দিয়ে এই স্কিমে অংশ নিতে পারবে। আবার প্রতিষ্ঠান বা প্রতিষ্ঠানের মালিকও প্রগতি স্কিমে অংশ গ্রহণ করতে পারবে। সেক্ষেত্রে মোট চাঁদার অর্ধেক কর্মচারী এবং বাকি অর্ধেক প্রতিষ্ঠান বহন করবে।

সুরক্ষা

এই স্কিমটা স্বনির্ভর ব্যক্তির জন্য। অর্থাৎ কেউ কোথাও চাকরি করছেন না কিন্তু নিজে উপার্জন করতে পারেন, তারা সুরক্ষা স্কিমে অংশ নিতে পারবেন। এর আওতায় পড়েন ফ্রিল্যান্সার, কৃষক, শ্রমিক ইত্যাদি পেশার লোকজন। এই স্কিমে চাঁদার হার চার রকম- মাসে এক হাজার, দুই হাজার, তিন হাজার ও পাঁচ হাজার টাকা করে।

সমতা

এই স্কিমে চাঁদার হার একটিই – এক হাজার টাকা। তবে এক্ষেত্রে প্রতিমাসে ব্যক্তি দেবে পাঁচশ টাকা আর বাকি পাঁচশো দেবে সরকার। মূলত দারিদ্রসীমার নিচে বসবাসরত স্বল্প আয়ের মানুষের জন্য এই স্কিম। এক্ষেত্রে দারিদ্রসীমা নির্ধারণ করবে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো। যেমন বর্তমানে বছরে যাদের আয় এখন বছরে ৬০ হাজার টাকার মধ্যে তারাই কেবল এই স্কিমের অন্তর্ভুক্ত হবেন।


স্কিম কীভাবে খুলবেন?

অর্থ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব গোলাম মোস্তফা বলেন, "আমরা একটা ফর্মূলা দিয়ে এই মুনাফার ব্যাপারটা ঠিক করেছি। ওখানে উল্লেখ করেছি এটা বাড়তে বা কমতে পারে। তবে আমাদের ফর্মূলা অনুযায়ী এর চেয়ে কমার সম্ভাবনা নেই।"

সর্বজনীন পেনশন স্কিমে নিবন্ধনের জন্য এই ওয়েবসাইটে যেতে হবে। সেখানে গিয়ে ব্যক্তি তার জাতীয় পরিচয়পত্র, মোবাইল নাম্বার ও ইমেইল দিয়ে কয়েকটি ধাপে এতে নিবন্ধন করবেন। এসময় ব্যাংক অ্যাকাউন্টের তথ্য দরকার হবে। কেউ চাইলে এক বা একাধিক ব্যক্তিকে নমিনি করতে পারবে।

মাসিক চাঁদা ছাড়াও কেউ চাইলে তিন মাস পরপর বা বছরে একবার পুরো চাঁদা দিয়ে দিতে পারবে। নির্ধারিত তারিখের মধ্যে চাঁদা দিতে ব্যর্থ হলে তার পরের এক মাস পর্যন্ত জরিমানা ছাড়া চাঁদা পরিশোধ করা যাবে। এরপর থেকে প্রতি দিনের জন্য ১% বিলম্ব ফি যুক্ত হবে। কেউ টানা ৩ কিস্তি পরিশোধ না করলে তার অ্যাকাউন্টটি স্থগিত হয়ে যাবে। তবে কেউ যদি নিজেকে অসচ্ছল ঘোষণা করে তাহলে ১২ মাস পর্যন্ত চাঁদা না দিলেও অ্যাকাউন্টটি স্থগিত হবে না।

অনলাইন ও যে কোন মোবাইল ব্যাংকিং সেবার মাধ্যমে চাঁদা পরিশোধ করা যাবে। আপাতত শুধুমাত্র সোনালী ব্যাংকে সর্বজনীন পেনশন স্কিমের হিসাব খোলা হয়েছে। কেউ চাইলে সরাসরি সোনালী ব্যাংকে গিয়েও নিবন্ধন করতে পারবেন ও চাঁদা দিতে পারবেন।

পেনশনের সুবিধা

অনেকের মনে একটি প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে। সেটি হচ্ছে - পেনশন স্কিমে টাকা দিয়ে শেষ পর্যন্ত সেটি পাওয়া যাবে তো?

এ প্রসঙ্গে মি. মোস্তফা বিবিসি বাংলাকে বলেন, "এটা নিয়ে শঙ্কা থাকার কোন কারণ নেই। কারণ সরকার নিজে এটার গ্যারান্টি দিচ্ছে। আর আমরা যে ইউনিক নাম্বার দেব প্রত্যেক পেনশনারকে, তারা কিন্তু ঐ নাম্বার দিয়ে সবসময় চেক করতে পারবেন তার অ্যাকাউন্টে কত টাকা আছে।"

পেনশনারগণ আজীবন অর্থাৎ মৃত্যুর আগ পর্যন্ত পেনশন সুবিধা ভোগ করতে পারবেন। তবে কেউ যদি ৭৫ বছর বয়স পূরণ হবার আগেই মারা যান তাহলে তার নমিনি পেনশনারের বয়স ৭৫ হওয়া পর্যন্ত পেনশন সুবিধা পাবেন।

আর যদি পেনশনার ১০ বছর চাঁদা দেবার আগেই মারা যান তাহলে তার জমাকৃত অর্থ মুনাফাসহ তার নমিনিকে ফেরত দেয়া হবে।

কারো যদি পেনশনে জমাকৃত অর্থ কোন এক পর্যায়ে উত্তোলনের দরকার হয় তাহলে সেই সুযোগও থাকছে। তার মোট জমার সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ অর্থ তিনি আবেদনের প্রেক্ষিতে ঋণ হিসেবে নিতে পারবেন।

পেনশনের জন্য প্রতিমাসে জমা দেয়া চাঁদা বিনিয়োগ হিসেবে দেখা হবে এবং সেই অর্থ কর রেয়াতের জন্য বিবেচিত হবে। আর মাসিক পেনশন বাবদ প্রাপ্ত অর্থ হবে আয়কর মুক্ত।