শেয়ার বাজার

এশিয়ার সেরা ১০০ বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশের একটিও নেই, ঢাবির অবস্থান ১৮৬

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: শুক্রবার, ২৩ জুন ২০২৩

এশিয়ার সেরা ১০০ বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশের একটিও নেই, ঢাবির অবস্থান ১৮৬

তবে শীর্ষ ১০০ বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্য প্রতিবেশী দেশ ভারতের ৪টি ও পাকিস্তানের ১টি বিশ্ববিদ্যালয় আছে।

যুক্তরাজ্যভিত্তিক শিক্ষা সাময়িকী 'টাইমস হায়ার এডুকেশন' প্রকাশিত 'এশিয়া ইউনিভার্সিটি র‍্যাঙ্কিং ২০২৩'- এ সেরা ১০০ বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে বাংলাদেশের কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নাম আসেনি।

তবে শীর্ষ ১০০ বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্য প্রতিবেশী দেশ ভারতের ৪টি ও পাকিস্তানের ১টি বিশ্ববিদ্যালয় আছে।

তালিকায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান ১৮৬তম। আর ১৯২তম অবস্থানে আছে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়।

গতকাল বৃহস্পতিবার এই তালিকা প্রকাশ করা হয়। র‍্যাঙ্কিংয়ে এশিয়ার সেরা বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে শীর্ষে আছে চীনের সিংহুয়া ও পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। আর এশিয়ার সেরা দশের মধ্যে চীনের ৪টি, হংকংয়ের ৩টি, সিঙ্গাপুরের ২টি ও জাপানের ১টি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে।

এ বছর ১৩টি বিষয়কে পারফরম্যান্স ইন্ডিকেটর বিবেচনায় নিয়ে এশিয়ার সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই তালিকা করা হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর পাঠদান, মৌলিক গবেষণা, জ্ঞান বিতরণের পদ্ধতি, আন্তর্জাতিক দৃষ্টিভঙ্গিসহ কয়েকটি বিষয় বিবেচনা করা হয়েছে এবারের তালিকায়।

Dummy Ad 1

২০২৫ সালের এসএসসি ফেব্রুয়ারিতে, এইচএসসি এপ্রিলে

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ০৫ মার্চ, ২০২৪

২০২৫ সালের এসএসসি ফেব্রুয়ারিতে, এইচএসসি এপ্রিলে

২০২৫ সালের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে শুরু হতে পারে। এ পরিকল্পনা অনুযায়ী সেভাবেই প্রস্তুতি নিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দিয়েছে শিক্ষা বোর্ডগুলো। একই সঙ্গে আগামী বছর এপ্রিলের শুরুতেই এইচএসসি পরীক্ষা আয়োজন করা হবে।

মঙ্গলবার (৫ মার্চ) আন্তঃশিক্ষা সমন্বয় বোর্ড সভাপতি এবং ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার এ তথ্য জানিয়েছেন।

অধ্যাপক তপন কুমার বলেন, করোনাভাইরাস পরিস্থিতির আগে আমরা সাধারণত এসএসসি পরীক্ষা ফেব্রুয়ারির শুরুতে আয়োজন করতাম। আমরা আগের সেই সূচিতে ফিরে যেতে চাই। এসএসসি পরীক্ষা দ্রুত শেষ করতে পারলে এইচএসসি পরীক্ষাও আগের সূচিতে আয়োজন করা যাবে।

ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যান বলেন, এইচএসসি পরীক্ষা এপ্রিল মাসে আয়োজন করা হতো। করোনার কারণে পাবলিক পরীক্ষার সূচিতে পরিবর্তন আনতে হয়েছে। আশা করছি আগামী বছর ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে এসএসসি এবং এপ্রিলের শুরুতেই এইচএসসি পরীক্ষা আয়োজন করতে পারবো।

আগামী বছরের এইচএসসি পরীক্ষার সিলেবাস সম্পর্কে অধ্যাপক তপন কুমার বলেন, আমাদের পরিকল্পনা ছিল পূর্ণাঙ্গ সিলেবাসে পরীক্ষা নেওয়া হবে। তবে শিক্ষার্থীদের সিলেবাস শেষ করা কঠিন হওয়ায় সংক্ষিপ্ত অর্থাৎ ২০২৩ সালের সিলেবাস অনুযায়ী পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।


সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে বৈষম্য চান না প্রধানমন্ত্রী: নওফেল

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২১ জানুয়ারি, ২০২৪

সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে বৈষম্য চান না প্রধানমন্ত্রী: নওফেল

JlecBD ডেস্ক: দেশের সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোনো ধরনের বৈষম্য চান না বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী বলেছেন—বিশ্ববিদালয়গুলোর মধ্যে কোনো রকমের বৈষম্য থাকা উচিত নয়। সেটা হোক প্রাইভেট কিংবা পাবলিক।’

বুধবার (১৭ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় রাজধানীর সেগুনবাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি একাডেমিকদের সঙ্গে মতবিনিময়সভায় এসব কথা বলেন মন্ত্রী।

মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, আমাদের দেশের প্রাইভেট ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা এখন আন্তর্জাতিক চাকরির ক্ষেত্রে ভালো জায়গায় যেতে পারছেন। সবার জন্য উচ্চশিক্ষার সুযোগও সৃষ্টি করা সম্ভব হয়েছে।

সভায় শিক্ষামন্ত্রীর বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনায় ফ্যাকাল্টিদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন। এ লক্ষ্যে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন পরিবর্তন করার কথাও বলেন তিনি। একই সঙ্গে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের চাকরি স্থায়ী করা এবং পেনশন দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করার আহ্বান জানান মন্ত্রী।

ইন্ডাস্ট্রি ও একাডেমিয়ার সমন্বয়ের গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি বলেন, ইন্ডাস্ট্রি একাডেমিয়া সমন্বয়ের বিষয়টি ভুলভাবে ব্যাখ্যা দেওয়া হয়। ইন্ডাস্ট্রি বলতে আমরা বুঝি ফিজিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ, মানে কলকারখানা। আমি বলছি— ভোকেশনের কথা। ভোকেশনের সঙ্গে একাডেমিয়ার লিংক বড় বিষয়।


নতুন শিক্ষাক্রম; ৬৫ বছরের প্রথা ভেঙে বিভাগহীন নতুন নিয়ম

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২১ জানুয়ারি, ২০২৪

নতুন শিক্ষাক্রম; ৬৫ বছরের প্রথা ভেঙে বিভাগহীন নতুন নিয়ম

JlecBD ডেস্ক: নবম শ্রেণি থেকে বিভাগ বিভাজন চালু হয়েছিল ১৯৫৯ সালে। সে হিসাবে ৬৫ বছর এ নিয়মে চলেছে শিক্ষা পদ্ধতি। স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পর দফায় দফায় শিক্ষাক্রম পরিবর্তন হলেও এ প্রথা কখনো ভাঙা হয়নি। অবশেষে এলো পরিবর্তন। দীর্ঘ ৬৫ বছর পর চলতি শিক্ষাবর্ষে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের সবাই পড়ছে একই বিষয়। নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী চালু হয়েছে এ প্রক্রিয়া। যেখানে নেই বিজ্ঞান, মানবিক ও বাণিজ্য শাখার বিভাজন। সবার বই এক, ক্লাসরুম এক, মূল্যায়ন পদ্ধতিও এক। এ নিয়ে বেজায় খুশি শিক্ষার্থীরা।

তবে বেশিরভাগ অভিভাবক বিষয়টি ভালোভাবে নিচ্ছেন না। তারা বিভাগ বিভাজনের পক্ষে মত দিয়েছেন। আবার কেউ কেউ একমুখী এ পদ্ধতিকে ভালো বলছেন। এমন মিশ্র প্রতিক্রিয়ার মধ্যেও প্রায় সব অভিভাবকের প্রশ্ন, নতুন শিক্ষাক্রমে বিভাগ বিভাজন কখন থেকে এবং কীভাবে?

অভিভাবকদের এমন প্রশ্নের স্পষ্ট উত্তর নেই জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) কাছেও। এনসিটিবি কর্মকর্তারা বলেন, নতুন জাতীয় শিক্ষাক্রমের রূপরেখায় বিষয়টির ধারণা থাকলেও তা চূড়ান্ত নয়। চলতি বছর যেহেতু একাদশ-দ্বাদশে নতুন শিক্ষাক্রম চালু হচ্ছে না, তাই এ নিয়ে তোড়জোড়ও করছেন না তারা। এ বিষয়ে অনুসন্ধান ও যাচাই প্রক্রিয়ায় ‘ধীরে চলা’র নীতি নিয়েছে এনসিটিবি। এ বছরের মাঝামাঝি সময়ে বিষয়টি নিয়ে সুস্পষ্ট রূপরেখা দাঁড় করানো হতে পারে।

''আমি সায়েন্সে (বিজ্ঞান) পড়েছি, ওর বাবাও সায়েন্সের। ছেলেকেও আমরা বিজ্ঞানে পড়াতে চেয়েছিলাম। এখন শুনি সবাই একই বিষয় পড়বে। সেখানে বিজ্ঞানের বিষয়ও কম। আমার ছেলে বেশ মেধাবী, পড়ালেখায়ও মনোযোগী। ওর জন্য বিজ্ঞান বিভাগই উপযুক্ত ছিল। এখন যে ১০টা বই সেটায় বিজ্ঞান বলে কিছু আছে তা তো আমার মনে হয় না।''

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০২৩ সালে প্রথম, ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম চালু হয়। চলতি বছর আরও চার শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রমে পড়ানো হচ্ছে। সেগুলো হলো- দ্বিতীয়, তৃতীয়, অষ্টম ও নবম। আগামী বছর অর্থাৎ, ২০২৫ সালে চতুর্থ, পঞ্চম ও দশম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম চালুর মাধ্যমে মাধ্যমিক পর্যন্ত স্তরে সব শ্রেণিতেই তা চালু হবে। ২০২৬ সালে একাদশ ও ২০২৭ সালে দ্বাদশ শ্রেণিতে চালু হবে নতুন শিক্ষাক্রম।

নবম শ্রেণিতে এ বছর নতুন শিক্ষাক্রম চালু হওয়ায় বিভাগ বিভাজন প্রথা বিলুপ্ত হয়ে গেছে। এটিই এ বছরে শিক্ষায় বড় পরিবর্তন। নতুন নিয়মে দশম শ্রেণি পর্যন্ত সব শিক্ষার্থীকে ১০টি অভিন্ন বিষয় পড়তে হবে। এতদিন অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত সবাইকে অভিন্ন বিষয় পড়ে নবম শ্রেণিতে বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা নামে আলাদা বিভাগ অর্থাৎ, বাধ্যতামূলক কয়েকটি বিষয়ের পাশাপাশি বিভাগভিত্তিক বিশেষায়িত কয়েকটি বিষয় পড়তে হতো।

নতুন শিক্ষাক্রমে শুধু দশম শ্রেণির পাঠ্যবই থেকে এসএসসি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র তৈরি করা হবে। আগে এটি নবম-দশম শ্রেণি মিলিয়ে করা হতো। ২০২৬ সালে নতুন শিক্ষাক্রমে শুধু দশম শ্রেণির বই পড়ে শিক্ষার্থীরা এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেবে।

বিভাগ বিভাজন কখন, কীভাবে?

উচ্চমাধ্যমিক তথা একাদশ শ্রেণিতে বিভাগ বিভাজনের একটি ধারণা নতুন শিক্ষাক্রমের রূপরেখায় রয়েছে। তবে এর পূর্ণাঙ্গ পদ্ধতি এখনো দাঁড় করানো যায়নি বলে জানিয়েছেন এনসিটিবি কর্মকর্তারা।

তাদের প্রাথমিক পরিকল্পনা হলো- উচ্চমাধ্যমিকে বিভাগ বিভাজন হবে। এক্ষেত্রে তিনটি বিষয় সবার জন্যই বাধ্যতামূলক থাকবে। নির্বাচিত বিষয়গুলো; যেমন- পদার্থ, রসায়ন, জীববিজ্ঞান, অর্থনীতি ইত্যাদি থেকে একজন শিক্ষার্থী তার আগ্রহ অনুযায়ী যেকোনো তিনটি বিষয় নির্বাচন করতে পারবে।

বিজ্ঞান, মানবিক, বাণিজ্যের বিভাজন তুলে দেওয়ায় আমাদের শিক্ষা হুমকির মুখে পড়তে পারে। সবাই সব শিখতে গিয়ে দেখা যাবে কেউই কিছুই ঠিকভাবে শিখছে না। আর মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষার এ অপূর্ণতার কারণে তারা উচ্চপর্যায়ে আর বিজ্ঞান শিক্ষায় আগ্রহীই হবে না।

কোনো শিক্ষার্থী চাইলে বিজ্ঞান বিষয়ের পাশাপাশি অন্য বিভাগের বিষয়ও নেওয়ার সুযোগ পাবে। যেমন- একজন শিক্ষার্থী চাইলে পদার্থ, রসায়নের পাশাপাশি অর্থনীতিও নেওয়ার সুযোগ পাবে। একইভাবে অন্য বিভাগের শিক্ষার্থীরাও মিশ্র বিষয় নেওয়ার সুযোগ পাবে। এছাড়া নতুন পদ্ধতিতে পেশাগত দক্ষতার জন্য আরেকটি বিষয় ঐচ্ছিকভাবে নেওয়ার সুযোগ রাখা হতে পারে।

জানতে চাইলে এনসিটিবির শিক্ষাক্রম ইউনিটের সদস্য অধ্যাপক মো. মশিউজ্জামান জাগো নিউজকে বলেন, উচ্চমাধ্যমিকে গিয়ে শিক্ষার্থীদের কীভাবে বিভাগ বিভাজনের সুযোগ দেওয়া হবে, তা এখনো চূড়ান্ত করিনি আমরা। এ বছরের মাঝামাঝি সময়, হয়তো মে-জুনের দিকে এটা চূড়ান্ত করা যেতে পারে। প্রাথমিক কিছু পরিকল্পনা আছে। সেগুলো আলাপ-আলোচনা করে পরিস্থিতি বিবেচনায় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

বিভাগ বিভাজনের চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে শিক্ষার্থীদের ‘ভালোর দিকটি বিবেচনায় রেখে’ করা হবে বলে জানিয়েছেন জাতীয় শিক্ষাক্রম উন্নয়ন ও পরিমার্জন কোর কমিটির সদস্য এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইআর) অধ্যাপক এম তারিক আহসান। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, বিষয়টি (একাদশ শ্রেণিতে বিভাগ বিভাজন) এখনো প্রাথমিক পরিকল্পনার স্তরে রয়েছে। যেভাবে পরিকল্পনা সাজানো হচ্ছে, তাতে সবার জন্যই ভালো হবে।

একাদশ-দ্বাদশে পরীক্ষা যেভাবে

বর্তমানে একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণিতে একই নামের দুটি করে বই পড়েন শিক্ষার্থীরা। নাম এক থাকলেও এগুলো দুই পত্রে বিভক্ত। যেমন- একাদশে পড়েন বাংলা প্রথমপত্র। দ্বাদশে বাংলা দ্বিতীয়পত্র। দুই বছর একই বিষয়গুলোর দুই পত্র পড়ে চূড়ান্ত পাবলিক পরীক্ষা অর্থাৎ, এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেন তারা।

নতুন শিক্ষাক্রমে এ প্রক্রিয়াও থাকছে না। নতুন নিয়মে একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণিতে প্রত্যেক বর্ষ শেষে বোর্ডের অধীন পরীক্ষা হবে। এরপর দুই পরীক্ষার ফলাফলের সমন্বয়ে এইচএসসির চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করা হবে।

উচ্চমাধ্যমিক অর্থাৎ, একাদশ-দ্বাদশে বইয়ের ক্ষেত্রেও পরিবর্তন আসবে। তখন বাংলা, ইংরেজি ও সমন্বিত আরেকটি বিষয় সব শিক্ষার্থীর জন্য বাধ্যতামূলক থাকবে। বাকি চারটি (তিনটি নৈর্বাচনিক ও একটি ঐচ্ছিক) শিক্ষার্থীরা পছন্দ অনুযায়ী বেছে নেওয়ার সুযোগ পাবেন।

বিভাজন বিলুপ্তিতে বিজ্ঞানের পাঠ্য নিয়ে ‘বিতর্ক’

নবম-দশম শ্রেণিতে বিভাগ বিভাজন বিলুপ্ত করায় বিজ্ঞান বিষয়ে গুরুত্বও কম দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন অনেক অভিভাবক। বিভাজন তুলে দেওয়ায় সন্তানের বিজ্ঞান বিষয় কম পড়া এবং উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্র নিয়ে চিন্তিত তারা। এমনকি শিক্ষক ও শিক্ষাবিদরাও বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন।

নবম-দশম শ্রেণিতে বিভাগ বিভাজন করে আমরা কয়জন বিজ্ঞানী তৈরি করতে পেরেছি? আমি মনে করি, নতুন এ শিক্ষাক্রমে বিজ্ঞানের প্রতি আগ্রহ কোনোভাবেই কমবে না। বরং আগে অধিকাংশ শিক্ষার্থীর মধ্যে বিজ্ঞান নিয়ে যে স্বল্প ধারণা ছিল, তা কাটিয়ে ওঠা যাবে।

রাজধানীর গভর্নমেন্ট ল্যাবরেটরি হাইস্কুলের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী রাফিউর রহমান। বিভাগ বিভাজন উঠে যাওয়ায় সে বেশ খুশি বলে জানিয়ে তার মা ইসমত আরা রুবি বলেন, আমি সায়েন্সে (বিজ্ঞান) পড়েছি, ওর বাবাও সায়েন্সের। ছেলেকেও আমরা বিজ্ঞানে পড়াতে চেয়েছিলাম। এখন শুনি সবাই একই বিষয় পড়বে। সেখানে বিজ্ঞানের বিষয়ও কম। আমার ছেলে বেশ মেধাবী, পড়ালেখায়ও মনোযোগী। ওর জন্য বিজ্ঞান বিভাগই উপযুক্ত ছিল। এখন যে ১০টা বই সেটাতে বিজ্ঞান বলে কিছু আছে বলে আমার তো মনে হয় না।

শিক্ষাবিদরা বলছেন, বিজ্ঞানের শিক্ষার্থীরা এতদিন নবম-দশমে পৃথকভাবে তুলনামূলক বড় পরিসরে পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, জীববিজ্ঞান ও উচ্চতর গণিতের মতো বিষয়গুলো পড়েছে। এসএসসির পর যত ওপরের স্তরে গেছে, বিজ্ঞানে শিক্ষার্থীদের হার তত কমেছে। ফলে মাধ্যমিক পর্যায়ে বিজ্ঞান শিক্ষার পরিসর সংকুচিত করা হলে পরের স্তরে তা আরও কমবে।

বাংলাদেশ শিক্ষাতথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরোর (ব্যানবেইস) প্রতিবেদন অনুযায়ী, সর্বশেষ তিন বছরে এসএসসির চেয়ে এইচএসসিতে বিজ্ঞানের শিক্ষার্থী অনেক কম। ২০২০ সালে এসএসসিতে বিজ্ঞানের শিক্ষার্থী ছিল মোট পরীক্ষার্থীর ৩০ দশমিক ৯২ শতাংশ, ২০২১ সালে ছিল ২৮ দশমিক ১৯ শতাংশ এবং ২০২২ সালে এ হার ছিল ৩১ দশমিক ৯৩ শতাংশ। অন্যদিকে ২০২০ সালে এইচএসসিতে বিজ্ঞানের শিক্ষার্থী ছিলেন ২৩ দশমিক ৪২ শতাংশ, ২০২১ সালে ২২ দশমিক ৫০ এবং ২০২২ সালে ছিল ২৪ দশমিক ৫৪ শতাংশ।

এ নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. কামরুল হাসান মামুন বলেন, বিজ্ঞান, মানবিক, বাণিজ্যের বিভাজন তুলে দেওয়ায় আমাদের শিক্ষা হুমকির মুখে পড়তে পারে। সবাই সব শিখতে গিয়ে দেখা যাবে কেউই কিছুই ঠিকভাবে শিখছে না। আর মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষার এ অপূর্ণতার কারণে তারা উচ্চপর্যায়ে আর বিজ্ঞান শিক্ষায় আগ্রহীই হবে না।

বিষয়টি মানতে নারাজ নতুন শিক্ষাক্রম প্রণেতাদের অন্যতম, এনসিটিবি সদস্য অধ্যাপক মশিউজ্জামান। তিনি দাবি করেন, নতুন শিক্ষাক্রমে দশম শ্রেণির সব শিক্ষার্থী বিজ্ঞানের বিষয়গুলো পড়ার সুযোগ পাবে। এর অর্থ হলো, শতভাগ শিক্ষার্থীর মধ্যেই বিজ্ঞানের প্রসারতা বাড়বে।

অধ্যাপক মশিউজ্জামান আরও বলেন, নবম-দশম শ্রেণিতে বিভাগ বিভাজন করে আমরা কয়জন বিজ্ঞানী তৈরি করতে পেরেছি? আমি মনে করি, নতুন এ শিক্ষাক্রমে বিজ্ঞানের প্রতি আগ্রহ কোনোভাবেই কমবে না। বরং আগে অধিকাংশ শিক্ষার্থীর মধ্যে বিজ্ঞান নিয়ে যে স্বল্প ধারণা ছিল, তা কাটিয়ে ওঠা যাবে।