শেয়ার বাজার

সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে বৈষম্য চান না প্রধানমন্ত্রী: নওফেল

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: রবিবার, ২১ জানুয়ারী ২০২৪

সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে বৈষম্য চান না প্রধানমন্ত্রী: নওফেল

JlecBD ডেস্ক: দেশের সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোনো ধরনের বৈষম্য চান না বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী বলেছেন—বিশ্ববিদালয়গুলোর মধ্যে কোনো রকমের বৈষম্য থাকা উচিত নয়। সেটা হোক প্রাইভেট কিংবা পাবলিক।’

বুধবার (১৭ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় রাজধানীর সেগুনবাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি একাডেমিকদের সঙ্গে মতবিনিময়সভায় এসব কথা বলেন মন্ত্রী।

মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, আমাদের দেশের প্রাইভেট ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা এখন আন্তর্জাতিক চাকরির ক্ষেত্রে ভালো জায়গায় যেতে পারছেন। সবার জন্য উচ্চশিক্ষার সুযোগও সৃষ্টি করা সম্ভব হয়েছে।

সভায় শিক্ষামন্ত্রীর বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনায় ফ্যাকাল্টিদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন। এ লক্ষ্যে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন পরিবর্তন করার কথাও বলেন তিনি। একই সঙ্গে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের চাকরি স্থায়ী করা এবং পেনশন দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করার আহ্বান জানান মন্ত্রী।

ইন্ডাস্ট্রি ও একাডেমিয়ার সমন্বয়ের গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি বলেন, ইন্ডাস্ট্রি একাডেমিয়া সমন্বয়ের বিষয়টি ভুলভাবে ব্যাখ্যা দেওয়া হয়। ইন্ডাস্ট্রি বলতে আমরা বুঝি ফিজিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ, মানে কলকারখানা। আমি বলছি— ভোকেশনের কথা। ভোকেশনের সঙ্গে একাডেমিয়ার লিংক বড় বিষয়।

Dummy Ad 1

সরকারি ক্রয়-প্রক্রিয়ায় এক ধরনের বাজার দখল-প্রক্রিয়ার রূপ লাভ করেছে-টিআইবি

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

সরকারি ক্রয়-প্রক্রিয়ায় এক ধরনের বাজার দখল-প্রক্রিয়ার রূপ লাভ করেছে-টিআইবি
বাংলাদেশে অনলাইনভিত্তিক সরকারি ক্রয়কার্য (ই-জিপি) বাস্তবায়নের বয়স প্রায় এক যুগ হওয়া সত্ত্বেও সুষ্ঠু প্রতিযোগিতার পরিবেশ তৈরি করতে পারেনি বরং সরকারি বিভাগসমূহ, রাজনৈতিক প্রভাবশালী গোষ্ঠী ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ত্রিমুখী যোগসাজশ নতুন মাত্রা পেয়েছে। ‘‘বাংলাদেশে ই-সরকারি ক্রয় : প্রতিযোগিতামূলক চর্চার প্রবণতা বিশ্লেষণ (২০১২-২০২৩)’’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে উল্লিখিত মন্তব্য করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। আরো বলা হয়, ই-টেন্ডারিং এর মাধ্যমে সম্পাদিত ৯৯ শতাংশের দরপত্র মূল্য ২৫ কোটি টাকার নিচে। অথাৎ বড় চুক্তিমূল্যের দরপত্র এখনো পুরোপুরি এ পক্রিয়ার আওতায় আসেনি। অন্যদিকে শীর্ষ ৫ শতাংশ ঠিকাদারের কাজের হিস্যা প্রতি বছরই বাড়ছে, গড়ে প্রায় ৩০ ভাগ কাজের নিয়ন্ত্রণই এসব ঠিকাদারের হাতে।

 টিআইবির ধানমণ্ডিস্থ কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান, উপদেষ্টা, নির্বাহী ব্যবস্থাপনা অধ্যাপক ড. সুমাইয়া খায়ের। টিআইবির আউটরিচ অ্যান্ড কমিউনিকেশন বিভাগের পরিচালক শেখ মন্জুর-ই-আলম এর সঞ্চালনায় মূল উপাস্থাপনা তুলে ধরেন একই বিভাগের কোর্ডিনেটর মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম। বিশ্লেষণমূলক প্রতিবেদনটি প্রস্তুত করেছেন আউটরিচ অ্যান্ড কমিউনিকেশন বিভাগের কোর্ডিনেটর মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম এবং অ্যাসিসট্যান্ট কোর্ডিনেটর, ডেটা ভিজ্যুয়ালাইজেশন রিফাত রহমান ও কে. এম. রফিকুল আলম।

এ গবেষণায় সরকারি ই-কেনাকাটায় প্রতিযোগিতার মাত্রা এবং একক দরপত্র পড়ার প্রবণতা চিহ্নিতকরণ; বাজার দখলের মাত্রা বিশ্লেষণ ও সরকারি ই-ক্রয়কার্যক্রমে প্রতিযোগিতা বাড়াতে করণীয় প্রস্তাব করার উদ্দেশ্যে ই-জিপি পোর্টালে থাকা ২০১২-২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত প্রাপ্ত সকল ই-কার্যাদেশ (৪ লাখ ৫৫ হাজার ৬ শত ৩৩টি) বিশ্লেষণ করা হয়েছে। ডেটা সংগ্রহ ও প্রক্রিয়াকরণে পাইথন ও পাওয়ার কোয়েরি এবং ডেটা বিশ্লেষণ ও উপস্থাপনায় পাওয়ার বিআই ও ড্যাক্সের ব্যবহার করা হয়েছে।

প্রতিবেদন অনুযায়ী সরকারি ই-ক্রয়কার্যের ৯৬ ভাগের বেশি কেনাকাটা হয় দুটি ক্রয় পদ্ধতিতে। এর একটি উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতি, অন্যটি সীমিত দরপত্র পদ্ধতি। উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে সর্বোচ্চ ৫৩ ভাগ এবং ৪৩ ভাগ কেনাকাটা হয়েছে সীমিত দরপত্র পদ্ধতিতে। ই-ক্রয়কার্যে সবার শীর্ষে স্থানীয় সরকার বিভাগ (মোট কার্যাদেশের ৪৪ শতাংশ এবং চুক্তি মূল্যের ৪১ শতাংশ)। ই- কেনাকাটার ৯৩ শতাংশ (মোট কার্যাদেশ) আর মূল্যের দিক থেকে ৯৭ শতাংশ মূলত ১০টি মন্ত্রণালয় বা বিভাগের মাধ্যমে হয়ে থাকে।

ই-জিপি সরকারি ক্রয়-প্রক্রিয়ায় দরপত্র পড়ার হারকে আপাত দৃষ্টিতে বাড়ালেও উন্মুক্ত দরপত্রপদ্ধতিতে দরপত্র জমার গড় মাত্র ৩.৫৩, যেখানে সীমিত দরপত্রপদ্ধতিতে এই গড় ৪৭.৭৫। ডেটা বিশ্লেষণে দেখা যায়, উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে ১০ শতাংশের মূল্যসীমা সীমিত দরপত্র পদ্ধতিকে জনপ্রিয় করে তুলেছে, যেখানে কাজ পেতে কাজের পূর্ব অভিজ্ঞতা প্রয়োজন হয় না, যেটি বাজারে প্রতিযোগীতার পরিবেশ বিনষ্ট করছে।

বিশ্লেষণ বলছে, ই-ক্রয় কার্যক্রমে ৪৬ ভাগ ক্ষেত্রে দরপত্র পড়ে ৪ টির কম। উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে এ হার ৬৫ ভাগ, যা ক্রয় প্রক্রিয়ায় কম মাত্রার প্রতিযোগিতার ইঙ্গিত করে। শীর্ষ ৫ শতাংশ ঠিকাদারের কাজের হিস্যা প্রতি বছরই বাড়ছে। গড়ে ২৬ ভাগের বেশি কাজ পাচ্ছে এসব বড় ঠিকাদার এবং নিচের দিকে থাকা ১০ শতাংশ ঠিকাদার পাচ্ছে মাত্র ২ থেকে ৩ ভাগ কাজ। সীমিত দরপত্রপদ্ধতি উন্মুক্ত দরপত্রপদ্ধতির চেয়ে বেশি জনপ্রিয়। সার্বিকভাবে, ১৯ শতাংশ ক্ষেত্রে দরপত্র পড়েছে মাত্র একটি। অর্থাৎ প্রতি পাঁচটি দরপত্রের একটি একক দরপত্রের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত হয়েছে। উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে এই হার ২৬ শতাংশ অর্থাৎ প্রতি চারটির একটিই একক দরপত্র। সীমিত দরপত্র পদ্ধতিতে এই হার মাত্র ১১ শতাংশ।

প্রতিবেদন অনুযায়ী ই-ক্রয় কার্যের ৭০ শতাংশ এখনও পাচ্ছেন স্থানীয় ঠিকাদাররা। মাত্র ৩০ শতাংশ কাজ পাচ্ছেন স্থানীয় নন এমন ঠিকাদার। দরপত্র প্রক্রিয়ায় স্থানীয় ঠিকাদারের আধিপত্য ইঙ্গিত করে সরকারি ক্রয় প্রক্রিয়ায় সম্ভাব্য যোগসাজশ এবং গোষ্ঠীগত নিয়ন্ত্রণ ও রাজনৈতিক প্রভাব বিদ্যমান।

বিশ্লেষণ বলছে, ই-ক্রয়প্রক্রিয়ায় একক দরপত্র পড়ার প্রবণতা বাড়ছে। ২০১২ থেকে ২০২৩ এর ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৬০ হাজার ৬৯ কোটি টাকার কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছে একক দরপত্রের মাধ্যমে। ৯২টি ক্রয়কারী প্রতিষ্ঠানে একক দরপত্র পড়ার হার ৭৫ ভাগের বেশি এবং ৪ শত ১৬টি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান তাদের কাজের ৭৫ ভাগই পেয়েছে একক দরপত্রের মাধ্যমে। ফেনী ও নোয়াখালী সবচে বেশি একক দরপত্র প্রবণ জেলা, এই দুই জেলায় প্রতি ২টি কার্যাদেশের একটি একক দরপত্র। এরপরেই রয়েছে কুমিল্লা ও নারায়নগঞ্জ, এই দুই জেলায় প্রতি তিনটির একটি কার্যাদেশ দেয়া হয়েছে একক দরপত্রের মাধ্যমে। এই তালিকায় ঢাকা জেলার অবস্থান পঞ্চম। একক দরপত্র পড়ার হার ২৮ ভাগের বেশি। জেলাগুলোর মধ্যে একক দরপত্র সবচে কম পড়ে শরিয়তপুরে, প্রায় ৫ ভাগের কম; এরপরই রয়েছে ঠাকুরগাঁও এর অবস্থান, ৫.৬৮ শতাংশ। ছয়ভাগের বেশি একক দরপত্র পড়া জেলাগুলো হচ্ছে শেরপুর, বগুড়া, লালমনিরহাট, লক্ষীপুর ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া। নওগাঁ ও নাটোরে একক দরপত্র পড়ার হার ৭ ভাগের বেশি।

সিটি কর্পোরেশনগুলোতে একক দরপত্র পড়ার হার বিশ্লেষণে দেখা যায় যে, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন ৬২.৭০ শতাংশ; ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন ৫৫.২১ শতাংশ; ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশন ৪২.১৭ শতাংশ; গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন ৩২.১৮ শতাংশ; নারায়নগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন ৩১.৩৭- শতাংশ।

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘ই-জিপি প্রক্রিয়া বাংলাদেশে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ইতিবাচক পদক্ষেপ হিসেবে শুরু হয়েছিল, যার মূল লক্ষ্য হচ্ছে, সরকারি খাতে স্বচ্ছতা ও উন্মুক্ত প্রতিযোগিতামূলক ক্রয় নিশ্চিত করা। ই-জিপি’র ফলে ক্রয়প্রক্রিয়া সহজতর হয়েছে, প্রক্রিয়াসংক্রান্ত ব্যয় কমেছে, তবে দরপত্র জমা ও কার্যাদেশপ্রাপ্তীর ক্ষেত্রে বাজার দখল ও একচেটিয়াকরণ অব্যাহত রয়েছে এবং বাস্তবে তার প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ হয়েছে। ফলে ই-জিপির মূল লক্ষ্য উন্মুক্ত প্রতিযোগিতার মাধ্যমে সর্বনিম্ন মূল্য ও সর্বোচ্চমান নিশ্চিতের ক্ষেত্রে আমরা ইতিবাচক পরিবর্তন লক্ষ করছি না।’

ড. ইফতেখারুজ্জামান আরো বলেন, ‘আমাদের এই প্রতিবেদনের মূল হচ্ছে, সরকারি ক্রয়-প্রক্রিয়ায় এক ধরনের বাজার দখল-প্রক্রিয়া মোটামুটি প্রাতিষ্ঠানিক রূপ লাভ করেছে। যদিও ই-জিপির মূল উদ্দেশ্যই ছিল, এই বাজার দখলকে নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ করা। তবে ক্রয়-পদ্ধতিতে প্রক্রিয়াগত অনেক উন্নয়ন হয়েছে এবং অনেক ক্ষেত্রে নিয়ম মেনেই ক্রয় সম্পন্ন হচ্ছে, তবে সার্বিকভাবে যেই মূল উদ্দেশ্য ছিল, সেটি আমরা এখনো অর্জন করতে পারিনি। প্রতিযোগিতামূলক স্বচ্ছক্রয় এখনো পুরোপুরি ভাবে নিশ্চিত করা যায়নি। অনেক ক্ষেত্রে ৭৫ থেকে ১০০ শতাংশ ক্রয় হয়েছে একক দরপত্র বা কোনো ধরনের প্রতিযোগিতা ছাড়াই। এ ধরনের পরিস্থিতি কোনোভাবেই জনগণের অর্থের সর্বোচ্চ মূল্যপ্রাপ্তী নিশ্চিত করতে পারে না। আমরা মনে করি, সরকারি ক্রয়কারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে রাজনৈতিক প্রভাব ও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের ত্রিমুখী যোগসাজশের ফলে একদিকে ই-জিপির প্রত্যাশিত সুফল পাওয়া যাচ্ছে না, অন্যদিকে সরকারি ক্রয়-প্রক্রিয়ার ব্যাপকভাবে একচেটিয়াকরণ হচ্ছে। সার্বিকভাবে আমরা বিশ^াস করি, স্বদিচ্ছা থাকলে সরকারি তথ্যভাণ্ডারে বিদ্যমান তথ্য-উপাত্তের বিশ্লেষণের মাধ্যমে কর্তৃপক্ষ ক্রয়-প্রক্রিয়ার দুর্বলতা চিহ্নিত করে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নিতে পারে।’

বিশ্লেষণের আলোকে ই-জিপিকে যোগসাজশ মুক্ত ও প্রতিযোগিতামূলক করার স্বার্থে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বিবেচনার জন্য টিআইবি ৬টি সুপারিশ উত্থাপন করছেÑ ই-ইজিপির আওতার বাইরে থাকা উ”চ চুক্তিমূল্যের সকল দরপত্র দ্রুততার সাথে ই-টেন্ডারিং প্রক্রিয়ায় আনতে হবে; সরকারি ক্রয়ে প্রতিযোগিতার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিতে উন্মুক্ত দরপত্রপদ্ধতি এবং সীমিত দরপত্রপদ্ধতিতে আরোপিত মূল্যসীমা প্রত্যাহার করতে হবে; সীমিত দরপত্রপদ্ধতি অনুসরণের বর্তমান ব্যবস্থাকে পুরোপুরি ঢেলে সাজিয়ে সরকারি ক্রয় আইন ২০০৬ এর সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ করতে হবে; বাজারে সুষ্ঠু প্রতিযোগিতার পরিবেশ নিশ্চিতে এবং সম্ভাব্য যোগসাজস বন্ধে একক দরপত্র প্রবণ ক্রয় অফিসগুলোকে নজরদারির ভেতর আনতে হবে; সকল ক্রয় কর্তৃপক্ষ এবং সিপিটিইউ সরকারি ক্রয়ে প্রতিযোগিতা বাড়াতে প্রয়োজনীয় ব্যব¯’া গ্রহণ এবং বাস্তবায়ন করতে হবে; একটি স্বচ্ছ, জবাবদিহিপূর্ণ, পক্ষপাতহীন, প্রতিযোগিতামূলক এবং সর্বোপরি দূর্নীতিমুক্ত সরকারি ক্রয় ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায় ই-জিপির মাধ্যমে তৈরি হওয়া সুযোগ কাজে লাগাতে উপাত্ত নির্ভর বিশ্লেষণ এবং তার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়াকে জোরদার করার মাধ্যমে পুরো ক্রয় ব্যবস্থা নিয়মিত পর্যবেক্ষণ ও উন্নয়নে মনোযোগী হতে হবে।

প্রযুক্তিতে মেয়েদের আগ্রহ অনেক বেশি: লাফিফা জামাল

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১২ মার্চ, ২০২৩

প্রযুক্তিতে মেয়েদের আগ্রহ অনেক বেশি: লাফিফা জামাল

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোবোটিকস অ্যান্ড মেকাট্রনিকস ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক লাফিফা জামাল। রোবটিক্স বিষয়ক তার গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশিত হয় বিশ্বের সেরা সেরা জার্নালে। তিনি শিক্ষার্থীদের প্রযুক্তিতে দক্ষ ও আগ্রহী করে গড়ে তোলার পাশাপাশি জেন্ডার বৈষম্য নিরসনে কাজ করে যাচ্ছেন। সম্প্রতি তিনি দেশ রূপান্তরের সাথে মুখোমুখি হয়েছিলেন। এবারের নারী দিবসের প্রতিপাদ্য ' ডিজিটাল প্রযুক্তি ও উদ্ভাবন, জেন্ডার বৈষম্য করবে নিরসন' কে তিনি সময়োপযোগী পদক্ষেপ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। পাশাপাশি প্রযুক্তি খাতে নারীর অংশগ্রহণ ও সমাজে জেন্ডার বৈষম্য নিরসন বিষয়ে আশার কথা শুনিয়েছেন। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন আব্দুল্লাহ আল তোফায়েল।

প্রশ্ন : এবারের নারী দিবসের প্রতিপাদ্য ' ডিজিটাল প্রযুক্তি ও উদ্ভাবন, জেন্ডার বৈষম্য করবে নিরসন' বিষয়ে আপনার অভিমত কি?

লাফিফা জামাল: এবারের প্রতিপাদ্য খুবই সুন্দর এবং সময়োপযোগী হয়েছে। একদিক দিয়ে আমরা প্রযুক্তিতে এগিয়ে যাওয়ার কথা বলছি, উদ্ভাবনের কথা বলছি।অন্যদিক থেকে জেন্ডার বৈষম্য নিরসনের কথাও বলছি। তথ্য প্রযুক্তি একটা স্কিল। আমাদের সবাইকে প্রযুক্তি সম্পর্কে জানতে হবে। হয়তোবা আমরা সবাই আবিষ্কার করতে পারব না, কিন্ত প্রযুক্তিগত জ্ঞান আমাদের প্রয়োজন। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের যুগে আপনি যদি সামনের দিকে এগিয়ে যেতে চান, তাহলে আপনাকে অবশ্যই প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনে এগিয়ে যেতে হবে। আমরা আর কতদিন ভোক্তা হয়ে থাকব। এখন সময় এসেছে, আমাদের নিজেদের আবিষ্কার করা দরকার। প্রযুক্তিতে দক্ষ হয়ে ওঠা প্রয়োজন।

প্রশ্ন : আমরা যদি তুলনামূলক বিশ্লেষণ করি,তাহলে প্রযুক্তি শিক্ষায় নারী শিক্ষার্থীদের আগ্রহ কেমন?

লাফিফা জামিল: মেয়েদের আগ্রহ অনেক বেশি। সময়ের সাথে সাথে এই আগ্রহ বেড়েছে। প্রযুক্তির বিষয়টা এমন যে, এখানে খুব ডেডিকেটেডলি সময় দিতে হয়। এই জায়গায় মেয়েরা এগিয়ে রয়েছে।

প্রশ্ন : প্রযুক্তি ও উদ্ভাবন খাতে নারীর অংশগ্রহণ কেমন?

লাফিফা জামাল: বর্তমানে আমাদের দেশে ৩০ শতাংশ নারীরা প্রযুক্তি নিয়ে পড়াশোনা করছে। যদিও পেশাগত জায়গায় ১০ শতাংশের মত নারীদের পাওয়া যায়। শিক্ষার্থী হিসেবে আমরা যাদের পাই, ক্যারিয়ারে গিয়ে তাদের পাই না। এটা যে শুধু প্রযুক্তি বা বিজ্ঞানে এমন নয়, সব সেক্টরেই নারী শিক্ষার্থীরা ড্রপ আউট হয়। পড়াশোনা শেষ করে অনেকেই কর্মক্ষেত্রে যোগ দেয় না, আবার অনেকেই কর্মক্ষেত্রে যুক্ত হয়েও পরে নানা কারণে ড্রপ আউট হয় বা চাকরি ছেড়ে দেয়।

প্রশ্ন : সিদ্ধান্ত গ্রহণের জায়গায় নারীদের উপস্থিতি কেমন?

লাফিফা জামাল: সাধারণত এন্ট্রি লেভেল বা মিড লেভেলে আমরা যতটা মেয়েদের পাই, হায়ার লেভেল বা সিদ্ধান্ত গ্রহণের জায়গায় তুলনামূলক ভাবে নারীদের উপস্থিতি কম। যদিও এখন পরিবর্তন হচ্ছে। এখন অনেক সেক্টরেই নারী প্রধান হচ্ছেন। এই জায়গায় পরিবর্তন হচ্ছে। তবে এই পরিবর্তন কে আরও বেগবান করতে হবে।

প্রশ্ন : আমাদের দেশে একটা মেয়ে ডাক্তার হওয়ার চিন্তা যতটা সহজে চিন্তা করতে পারে, ইঞ্জিনিয়ার বা বিজ্ঞানী হওয়ার চিন্তা ততটা করতে পারে না কেন?

লাফিফা জামাল: আমাদের সমাজে কতজন বাবা-মা চান আমার মেয়ে ইঞ্জিনিয়ার হোক। পরিবার থেকেই মেয়েদের এই সাইকোলজি তৈরি হয়। একটা মেয়ে জন্মের পর থেকে শুনে আসে গণিত বা ইঞ্জিনিয়ারিং খুব কঠিন। কঠিন সাব্জেক্ট মেয়েদের জন্য নয়- এই যে সামাজিক ট্যাবু, এটা একটা বড় ব্যারিয়ার। অথচ আপনি যখন গণিত বা ইঞ্জিনিয়ারিং পড়বেন এতে আপনার ব্রেইনের চর্চা হয়। ব্রেইন তো নারী পুরুষ উভয়ের ই সমান। এখানে তো শক্তি লাগতেছে না। পেশি শক্তিতে হয়তো মেয়েরা কিছুটা পিছিয়ে থাকে। এই ব্যারিয়ার দূর করতে হবে ।

প্রশ্ন : আপনি একদিক দিয়ে একাডেমিশিয়ান অন্যদিকে মাঠ পর্যায়ে আপনার দীর্ঘ অভিজ্ঞতা। সেই অভিজ্ঞতা থেকে, অভিভাবকদের ছেলেকে কম্পিউটার কিনে দেওয়ার পরিবর্তে মেয়েকেও কিনে দেব এই চিন্তাটা এসেছে কি?

লাফিফা জামাল: এই উত্তর টা একটু অন্যভাবে দেই। এই চিন্তার কিন্ত পরিবর্তন ঘটেছে। এটা বেশ আশাব্যঞ্জক। আমরা যদি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে তাকাই তাহলে দেখতে পাই ৫০ ভাগ নারী শিক্ষার্থী ১ম বর্ষে ভর্তি হচ্ছে। যাদের একটা বড় অংশ প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে আসছে। বর্তমানে স্কুল-কলেজে ঝড়ে পড়া কমেছে, বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে অংশগ্রহণ বেড়েছে। আমার অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, এখন বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে ডিনস অ্যাওয়ার্ডে মেয়েদের সংখ্যাই বেশি থাকে। এসএসসি এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফল ও জিপিএতে মেয়েরাই এগিয়ে থাকছে। ঢাবিসহ অন্যান্য ইউনিভার্সিটিতে নারী ফ্যাকাল্টির সংখ্যা বাড়ছে।

প্রশ্ন : আমাদের দেশে নারীদের একটা বড় অংশ গার্মেন্টসে কাজ করছে, তাদেরকে কীভাবে প্রযুক্তি সুবিধার আওতায় নিয়ে আসা যায়?

লাফিফা জামাল: এর জন্য সরকারি-বেসরকারি যৌথ উদ্যোগ প্রয়োজন। গার্মেন্টস মালিকদের এখানে একটা বড় ভূমিকা পালন করতে হবে। মেয়েরা এখন হাতে কাজ করছে। কিছুদিন পর যখন অটো মেশিনে কাজ শুরু হবে, তখন তারা কাজ হারাবে। সেই কাজ হারানোর আগেই তাদের প্রযুক্তিতে দক্ষ করে গড়ে তুলতে হবে। এই মেয়েগুলো যাতে আধুনিক যন্ত্র ব্যবহার করে কাজ করতে পারে, সে জন্য এখন থেকে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

প্রশ্ন : মফস্বলের স্কুল কলেজে ব্যবহারিকের চেয়ে থিওরি শিক্ষাকে প্রাধান্য দেওয়া হয়। এতে কি শুরুতেই শিক্ষার্থীদের নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে না?

লাফিফা জামাল: এ ক্ষেত্রে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া টা জরুরি। হয়তোবা দেখা যাচ্ছে যিনি জীববিজ্ঞান পড়াচ্ছেন তার ব্যাকগ্রাউন্ডে জীববিজ্ঞান নয় অন্য কোন সাব্জেক্ট রয়েছে। কম্পিউটার বা আইসিটি যিনি পড়াচ্ছেন তিনি হয়তো কম্পিউটারের ব্যবহার ই জানেন না। ফলে ব্যবহারিক বাদ দিয়ে থিওরি পড়াচ্ছেন।

প্রশ্ন : নারীদের দক্ষ করার কাজে যারা যুক্ত তাদের দাবি প্রযুক্তি খাতে প্রশিক্ষণের জন্য ৩০ শতাংশ নারী তারা পাচ্ছেন না।

লাফিফা জামাল: এটা কেবল প্রযুক্তি নয়, সব সেক্টরের চিত্র। স্কুল কলেজের শিক্ষক হিসেবে আমরা মেয়েদের বেশি দেখতে পাই। তবে এখানে আরেকটা বিষয় মাথায় রাখতে হবে, আগে কিন্ত উচ্চ শিক্ষায় মেয়েদের অংশ গ্রহণ কম ছিল। বর্তমানে এই সংখ্যা বাড়ছে। ফলে আমি মনে করি সামনে এই সংখ্যা বাড়বে।

প্রশ্ন : নারীদের শিক্ষিত করে গড়ে তুলতে পরিবারের ভূমিকা কতটুকু?

লাফিফা জামাল: আমি তো মনে করি পরিবারের সাপোর্টটা খুব বেশি দরকার। পারিবারিক ভাবে যদি কোন মেয়ে বাধার সম্মুখীন হয়, তাহলে শুরুতেই মনোবল হারিয়ে ফেলে। তাই পরিবারে পিতা মাতা এবং পরবর্তিতে জীবন সঙ্গীর ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে শ্বশুর বাড়ির মানুষদের ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।

প্রশ্ন : প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়লে নারীদের সাইবার বুলিংয়ের ঝুঁকি বাড়বে কি না?

লাফিফা জামাল: আমি তা মনে করি না। প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়লে সাইবার বুলিং বাড়বে বিষয়টা এমন নয়। আপনি যদি সচেতন না হন তাহলে একদিন ব্যবহার করেও বিপদে পড়তে পারেন। সে ক্ষেত্রে বুলিং প্রতিরোধ করতে হলে সচেতনতা তৈরি করতে হবে। সমাজেও তো বুলিং হয়, সে জন্য কি আমরা দরজা জানালা বন্ধ করে বসে থাকি। কাজেই বুলিংয়ের ভয়ে প্রযুক্তিতে মেয়েরা আসবে না, আমি তা বিশ্বাস করি না। যত বেশি প্রযুক্তির ব্যবহারে দক্ষ হতে পারবে, ততই বুলিংয়ের সম্ভাবনা কমবে।

প্রশ্ন : কর্মক্ষেত্রে নারীর নিরাপদ পরিবেশ কতটা নিশ্চিত করা গেছে?

লাফিফা জামাল: আমরা কি গণ পরিবহনে নিরাপদ পরিবেশ দিতে পেরেছি? পারি নি। শুধু গণ পরিবহনে কেন, রাতের বেলা যদি আমি হেঁটেও রাস্তায় বের হই, নিজেকে নিরাপত্তা দিতে পারি না। একইভাবে কর্মক্ষেত্রেও শত ভাগ নিরাপদ পরিবেশ এখনও আমরা নিশ্চিত করতে পারিনি। তবে কর্মক্ষেত্রে নারীর জন্য নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য সরকারি ও বেসরকারি উভয় পর্যায়েই উদ্যোগ প্রয়োজন।'


সংগ্রহ : দেশ রূপান্তর


রাজনৈতিক সমাধান না এলে অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতা চাপ তৈরি করবে – দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

রাজনৈতিক সমাধান না এলে অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতা চাপ তৈরি করবে – দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য

দেশে চলমান ‘অস্বস্তির’ রাজনৈতিক সমাধানের ওপর জোর দিয়েছেন খ্যাতিমান অর্থনীতিবিদ, সিপিডি’র বিশেষ ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। সাংবাদিককে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, আমি বলছি রাজনৈতিক সমাধানে আসতে হবে। রাজনৈতিক সমাধানে না এলে পরে অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতা আমাদের ওপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি করবে। বাংলাদেশে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে না থাকার জন্য বাজার ব্যবস্থাপনার ত্রুটিকে অন্যতম প্রধান দায়ী মনে করেন। শ্রীলঙ্কার অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়ানোর পেছনে শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান আর রাজনৈতিক ঐকমত্যকে কৃতিত্ব দিয়েছেন। সাক্ষাৎকারের বিস্তারিত-

প্রশ্ন: দেশের বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতি কেমন মনে হচ্ছে?

ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য: অর্থনীতি তো চাপের মধ্যে আছে এটা মোটামুটি পরিষ্কার। বিষয়টা হলো যে কোভিডের অতিমারির সময়ে অর্থনীতির ওপরে যে চাপ সৃষ্টি হয়েছিল এবং তৎপরবর্তী সময়ে কিছুটা উন্নয়নের দিকে ঊর্ধ্বগতির দিকে অর্থনীতি যাওয়া শুরু করেছিল যদিও সেগুলোর উন্নতিটা বিভিন্ন কারণে সব জায়গাতে সমানভাবে না। তো সেটা কিন্তু ধরে রাখা যায়নি। এবং ২০২২-২৩ অর্থবছর শেষ হয়েছে তাতে দেখা যায় যে, একদিকে যে আর্থিক খাত সেটাতে আমার রাজস্ব আদায় এবং একইসঙ্গে সরকারি ব্যয় দুই জায়গায়ই কমের দিকে রয়েছে। উপরন্তু সাম্প্রতিককালে যেহেতু আমদানি নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে তার ফলে অনেক ক্ষেত্রে শুল্ক আদায় কম হওয়াতে রাজস্ব আদায়ের ওপরে চাপ সৃষ্টি হয়েছে।

পক্ষান্তরে যেহেতু ব্যক্তি খাতে ঋণ প্রবাহ কমে গেছে এবং বিনিয়োগ কমছে কিন্তু অপরদিকে প্রত্যক্ষ কর আহরণের একটা বড় চেষ্টা রয়েছে। সেটাও একটা আগামী দিনের বিনিয়োগ এবং কর্মসংস্থানের ওপরে নতুন চাপ সৃষ্টি করছে। যেটা দেখার বিষয় সরকার যে ব্যয়টা করছে এখন সেই ব্যয়টাতে দেখা যাচ্ছে উন্নয়ন ব্যয়ের চেয়ে পরিচালন ব্যয়ের ক্ষেত্রে বরাদ্দ এবং ব্যয় ব্যবহারটা বেশি। সেটা দেখতে গেলে আর্থিক খাতের যে কাঠামোগত সমস্যা এখন মৌসুমী সমস্যার সঙ্গে যুক্ত হয়ে বেশ সমস্যায় রেখেছে। আর তার চেয়েও বড় সমস্যা যেটা বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বিগত দশকে শক্তির জায়গা ছিল বৈদেশিক খাতে লেনদেনের ভারসাম্য সেই জায়গাতে তো আমরা লক্ষ্য করছি কীভাবে বৈদেশিক মুদ্রার মজুত কমে যাচ্ছে এবং রপ্তানি যেটুকু বাড়ছে সেটুকু দিয়ে আমরা সম্পূর্ণ আমদানি করতে পারছি না, আমদানি নিয়ন্ত্রণ করতে হচ্ছে আবার ব্যক্তি বিনিয়োগের ওপর প্রভাব ফেলছে এবং যেটা দেখা যাচ্ছে যে রেমিট্যান্সটা যেভাবে আমরা প্রত্যাশা করেছিলাম সেভাবে নেই। যার ফলে যেই ধরনের বৈদেশিক মুদ্রা মজুতের প্রত্যাশা করেছিলাম সেভাবে হচ্ছে না।

ফলে যেটা হচ্ছে সরকারের আরও বেশি করে বৈদেশিক ঋণ নেয়ার জন্য সরকারকে দ্বারস্থ হতে হচ্ছে বাজেট সাপোর্ট জোগাড় করার জন্য বিশ্ব ব্যাংক এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক অন্যদের কাছ থেকে। এবং আরেকটা যেটা লক্ষ্য করছি যে সরকার ওই যে আর্থিক খাতে যে তার ঘাটতি সেটা পূরণ করার জন্য আবার ব্যাংকিং খাত থেকে বড় ধরনের ঋণ নিচ্ছে যেটা আবার ব্যক্তি খাতে প্রভাব ফেলছে বলে আমরা দেখছি। যেহেতু সরকারের বড় দুটো খাত আর্থিক খাত এবং বৈদেশিক লেনদেন খাত। দুই ক্ষেত্রেই যে ভঙ্গুরতা আমরা ২০২২-২৩ এ দেখেছিলাম সেটা জুলাই আগস্ট মাসে এসে খুব বেশি কমেনি। আর এর সঙ্গে যে অর্থনীতির বড় সমস্যাটা যুক্ত হয়েছে সেটা হলো মূল্যস্ফীতি সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় প্রত্যক্ষভাবে বেড়ে গেছে। যেটা লক্ষণীয় বিষয় সেটা হলো আন্তর্জাতিক বাজারে কিন্তু পণ্যমূল্য আগের চেয়ে অনেক কমে গেছে। সেটার সুযোগ বাংলাদেশ নিতে পারছে না। অর্থাৎ বাজার ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে আমাদের বহু ঘাটতি রয়ে গেছে। তার একটা প্রধান ঘাটতি তো অবশ্যই যে তথ্য-উপাত্ত ঠিকমতো নেই এবং সেই তথ্য-উপাত্তের প্রতি যথেষ্ট নজর দিয়ে নীতি নির্ধারকরা দৈনন্দিন নীতিগুলোর যে সংস্কার দরকার সেগুলো সেভাবে করছে না। সেহেতু আপনি দেখবেন যে যদিও আমরা আইএমএফের কাছে গেছি বিভিন্ন ধরনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তার অনেক ক্ষেত্রেই কিন্তু আমরা ঠিকমতো নিষ্ঠার সঙ্গে পরিপালন করতে পারছি না। যেমন আপনার সুদের হার যেভাবে শিথিল করার কথা ছিল এবং মূল্যস্ফীতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে যাতে সঞ্চয়ের হার বাড়ে সেটার জন্য চেষ্টা করার কথা ছিল সেটা করা হয়নি এবং একইভাবে আপনার টাকার বিনিময় হারকে যে সামঞ্জস্য বিধান করার কথা ছিল সেটা করেনি। ‌

প্রশ্ন: বিশ্বব্যাপী অনেক দেশে গত এক বছরের মূল্যস্ফীতি কমে আসলেও বাংলাদেশের মূল্যস্ফীতি বেড়েই চলছে। আপনার কাছে এর কারণ কী বলে মনে হচ্ছে?

ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য: আপনাকে তো বললাম যে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করার জন্য পণ্য মূল্য একটা বড় বিষয়। তো পণ্য মূল্য যদি আমদানিকৃত পণ্য মূল্য হয় তাহলে সেটা যদি টাকার মান কমতে থাকে তাহলে সেটাতে আমরা আসবো। কিন্তু তারপরেও যে সমস্ত জিনিসের দাম কমেছে সে সমস্ত জিনিসের দামের সুফলটা আমাদের ভোক্তাদের কাছে দেয়ার ক্ষেত্রে আমরা বললাম যে বাজার ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে বড় ধরনের সমস্যা রয়ে গেছে। এবং এখানে যে সমস্যা রয়ে গেছে এটাতো প্রকাশ পাচ্ছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় যে কথাটা বলছে, কৃষি মন্ত্রণালয় সে কথার সঙ্গে একমত হচ্ছে না বা প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় তার সঙ্গে একমত হচ্ছে না সময়মতো আমদানির সিদ্ধান্ত হচ্ছে না সময়মতো প্রণোদনার প্রয়োজনটাকে মেটানো যাচ্ছে না। তো এখানে একটা অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে একটা বড় ধরনের শৃঙ্খলার অভাব আমরা লক্ষ্য করছি। এবং আরেকটা যেটা বড় বিষয় সেটা হলো যে মূল্যস্ফীতি সবই তো আর আমদানিকৃত পণ্য না, খাদ্য উৎপাদনের বড় অংশই দেশের ভেতর এখন হয়। সেহেতু যেগুলো দেশে উৎপাদিত হচ্ছে সেই জিনিসের দাম কেন বাড়ছে। এর ব্যাখ্যা তো আমরা নীতি নির্ধারকদের কাছ থেকে পাচ্ছি না। তো আমি আপনাকে সাধারণভাবে বলবো অর্থনৈতিক কাঠামোগত যে সমস্যাগুলো ছিল বৈশ্বিক পরিস্থিতি এটাকে যে নতুন চ্যালেঞ্জগুলো দিয়েছে এইগুলোকে মোকাবিলা করার জন্য যে সুষ্ঠু অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা বা নীতি-নেতৃত্ব বা সংস্কারের উদ্যোগ সেগুলোর ক্ষেত্রে দুঃখজনক ভাবে আইএমএফের কাছে যাওয়ার পরেও আমরা বড় ধরনের ঘাটতির মধ্যে রয়ে গেছি। অভাবের ভেতরে আছি।

প্রশ্ন: শ্রীলঙ্কা কিছুদিন আগে দেউলিয়া হয়ে গিয়েছিল এখন আবার তাদের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়িয়েছে এর পেছনে ম্যাজিক কী? শ্রীলঙ্কা মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারলেও আমরা কেন পারছি না।

ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য: শ্রীলঙ্কার উদাহরণ থেকে দুটো শিক্ষা নেয়ার ব্যাপার আছে একটা হলো যদি আপনার অর্থনৈতিক কাঠামোতে মৌলিক শক্তি থাকে বিশেষ করে মানবসম্পদ এবং যে সমস্ত প্রতিষ্ঠান আছে সেই প্রতিষ্ঠানগুলোর কার্যকারিতার ভেতরে যেমন কেন্দ্রীয় ব্যাংক বা আপনার কর আদায় করার প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তি বিনিয়োগকে পরিচালনা করার ক্ষেত্রের প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠানগুলোর যদি আপনার মৌলিক শক্তি থাকে তাহলে আপনি যখন সমস্যা উত্তরণে যান তখন এই শক্তিগুলো অনেক কাজে দেয়। দ্বিতীয় যে শিক্ষাটা এসেছে সেটা হলো, যে এই সংকটকে মোকাবিলা করার জন্য যতই পীড়াদায়ক হোক না কেন সেই সমস্ত সংস্কারের পদক্ষেপ তারা নিয়েছে। যে সমস্ত প্রতিশ্রুতি তারা বৈদেশিক দাতা গোষ্ঠীর কাছে বা ঋণদাতাদের কাছে দিয়েছিল সেগুলো তারা কার্যকর ভাবে করেছে তার সবচেয়ে বড় সুফল হলো যে, তারা মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছে। এখন বাংলাদেশের চেয়ে শ্রীলঙ্কাতে মূল্যস্ফীতি কম। এবং তার চেয়ে বড় যে ঘটনাটা ঘটেছে সেটা হলো এর ভেতরে শ্রীলঙ্কা আপনার বৈদেশিক ঋণ যেটা বাংলাদেশ থেকে নিয়েছিল সেটা তারা শোধ করার উদ্যোগ শুরু করেছে। ইতিমধ্যে আমরা দুই কিস্তি পেয়েছি। তো এর চেয়ে বড় শিক্ষা আর কি হতে পারে। যে সংকট যখন আসে সংকটকে নিয়ে দুশ্চিন্তা করার চেয়ে সংকট মোকাবিলা করার জন্য যে ধরনের পরীক্ষিত পথগুলো আছে। সেই তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে সেই পরীক্ষিত পথগুলোতে যাওয়াই হলো বড় বিষয়। সেখানে যেন আমাদের দলীয় রাজনীতির বা জাতীয় রাজনীতির প্রয়োজনগুলো আমার অর্থনৈতিক বাস্তবতাকে যেন বিস্তৃত করে না দেয়।

প্রশ্ন: শ্রীলঙ্কায় আগের সরকার নিয়ন্ত্রণ করতে পারলো না কিন্তু বর্তমান সরকার কীভাবে পারলো?

ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য: নতুন সরকার যেটা এসেছে সেই নতুন সরকার তো জাতীয় ঐকমত্যের সরকার। সেহেতু এখানে যে সংস্কার যে পদক্ষেপগুলো হয়েছে সেখানে আপনার সব ধরনের দলমত নির্বিশেষে আলোচনার ভিত্তিতেই তারা একটা জাতীয় উত্তোলন পরিকল্পনা করেছে। এবং সেই জাতীয় উত্তোলন পরিকল্পনাকে তারা নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করছে। সেহেতু শ্রীলঙ্কা থেকে তৃতীয় শিক্ষা যদি আপনি বলেন তাহলে এই ধরনের সংকট মোকাবিলা উত্তরণের ক্ষেত্রে জাতীয় ঐকমত্যের অনেক প্রয়োজন পড়ে। তখন সবাই মিলে যদি সমর্থন না দেয় এবং শুধু রাজনৈতিক শক্তির সঙ্গে পেশাজীবী, ব্যবসায়ী গোষ্ঠী, নাগরিক সমাজ যদি একসঙ্গে থাকে তাহলে এটা কার্যকর করা সম্ভব।

প্রশ্ন: আপনি বেশকিছু জায়গায় বলেছেন, ইউক্রেন রাশিয়ার যুদ্ধ না হলেও বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সংকটে পড়তো এর পেছনের কারণ কী?

ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য: এর কারণ হলো যে ধরুন এটা হলো একটা অংশ যেকোনো পণ্যমূল্যের বৃদ্ধি হয়েছে যুদ্ধের কারণে সরবরাহ থেমে গেছে ইত্যাদি। তো এটা একটা বড় জায়গা হলো আপনার খাদ্য প্রবাহ। ইউক্রেন দিয়ে আপনি গম আনতে পারছেন না ইত্যাদি ইত্যাদি। তো বাংলাদেশ তো খাদ্যের ক্ষেত্রে তো ৯৯% অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে আসে। তাহলে চালের দাম কেন বাড়বে? অভ্যন্তরীণ উৎপাদন যেগুলো আছে এগুলো কেন বাড়বে? এই দামগুলো কেন বাজারে বাড়ছে এবং আপনি যে দামে আনছেন সেই ক্ষেত্রে আপনার যে সমস্ত সংকটগুলো আছে সেখানে আপনি শুল্ক সমন্বয় করে আপনি তাৎক্ষণিক কোনো ব্যবস্থা নিতে পারেন না কেন? তার বাইরে আপনি যদি দেখেন যে সমস্ত প্রতিষ্ঠানের কথা আমি বললাম, বাংলাদেশে তো প্রতিষ্ঠানের সবচেয়ে বড় সংকটের জায়গা হলো আমার ব্যাংকিং খাত। তো ব্যাংকিং খাতে অনাদায় ঋণ কি বেড়েছে ইউক্রেনের কারণে? শেয়ারবাজার ঘুরে দাঁড়ায় না কেন? শেয়ারবাজারে কি ইউক্রেন থেকে পুঁজি আসতো?

প্রশ্ন: বাংলাদেশের বর্তমান অর্থনৈতিক সংকট থেকে উত্তরণের জন্য আপনার কোনো পরামর্শ আছে কী?

ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য: আমার প্রথম পরামর্শ হলো যে এই মুহূর্তে বিরাজমান যে রাজনৈতিক অস্বস্তি রয়েছে আমি সংকট বললাম না অস্বস্তি বললাম সেই অস্বস্তি যেন অর্থনৈতিক প্রক্রিয়ার ওপর চাপ সৃষ্টি না করে। এমন ধরনের পদক্ষেপ যেন সরকার এবং বিরোধী পক্ষ থেকে না আসে যাতে বাংলাদেশের জনজীবন অসুবিধার ভেতর পড়ে, খেটে খাওয়া মানুষের আয়-রুজি নষ্ট হয় এবং একটা অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার ভেতরে দেশটা চলে না যায়। সে অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তায় যাওয়ার জন্য এর চেয়ে আর খারাপ সময় নেই কিন্তু। আর দ্বিতীয়ত, এই মুহূর্তে যে রাজনৈতিক আলোচনা হচ্ছে বা রাজনৈতিক পক্ষ বলছি তারা সকলেই অতীতমুখী একটা আলোচনা করে যেই জিনিসটা আমি এখনো দেখি না সেটা হলো যদি নির্বাচনের পরে উনারা কীভাবে দেশ পরিচালনা করবেন। এই ব্যাপারে মুখে মুখে বিভিন্ন বা কাগজপত্রে বিভিন্ন কথা থাকলেও উনারা এটা প্রচার এবং কথার ভেতরে সেভাবে আনেন না। সরকারি দল যেটুকুও বা আনে কারণ হলো তারা ক্ষমতায় আছে প্রক্রিয়ার ভেতর আছে। বিরোধী দল তারা অনেক দফা দিলেও সেগুলো তাদের রাজনৈতিক প্রচারণার অংশ হিসেবে আসে না। সেটা হলো যে তারা ভিন্নভাবে কী করবেন? তারা এই ব্যাংকিং সমস্যার সমাধান কীভাবে করবেন? পুঁজিবাজারকে কীভাবে চাঙ্গা করবেন? মূল্যস্ফীতিকে কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করবেন? এলডিসি থেকে বের হলে পরে আমরা কি কি সমস্যায় পড়বো বা মোকাবিলা ওনারা কীভাবে করবে? কৃষিতে উৎপাদনশীলতা বাড়ানোর ক্ষেত্রে কী করবেন? গরিব মানুষের জন্য যে সুরক্ষা আছে সেই সুরক্ষা ওনারা কীভাবে সম্প্রসারণ করবেন যেখানে আয়ের সংকট আছে এই সমস্ত বিষয়গুলো আমাদের সামনে নিয়ে আসা উচিত।

নাগরিকদের পক্ষ থেকে দেখেন বাংলাদেশে প্রায় এখন এক তৃতীয়াংশের উপরে হলো যুবসমাজ। সেই যুবসমাজ অনেক বেশি ইতিহাস সচেতন। তাদের অনেক বেশি প্রত্যাশা হলো দেশ আগামী দিনে কোথায় থাকবে? এই কথাটা আমার রাজনীতিতে নিয়ে আসতে হবে। রাজনীতিতে এখন আগামী দিন কোথায় থাকবে এটার ভেতরে শুধুমাত্র রক্তপাত এবং ভয়-ভীতির আলোচনা চলছে। দেশকে পরবর্তী ধাপে নিয়ে যাওয়ার জন্য আলোচনাকে আমরা সেইভাবে গুরুত্ব পেতে দেখি না।

আমি বলছি রাজনৈতিক সমাধানে আসতে হবে। রাজনৈতিক সমাধানে না আসলে পরে অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতা আমাদের ওপরে বাড়তি চাপ সৃষ্টি করবে। এটা দেখা গেছে যে, বাংলাদেশের যদি আপনি ইতিহাস দেখেন ৫২ বছরে বাংলাদেশের নাগরিকরা খেটে খাওয়া মানুষ যেভাবে অর্থনীতিকে সামনে এগিয়ে নিয়ে গেছে আমরা অনেক সময় তাকে পরিপূরক সন্তোষজনক রাজনৈতিক পরিবেশ দিতে পারিনি। আমাদের কথা হলো আগামী দিনে এমন রাজনৈতিক পরিবেশ দিতে হবে যাতে বাংলাদেশের পিছিয়ে থাকা মানুষগুলো খেটে খাওয়া মানুষগুলো আরও বেশি সুষম উন্নয়নের অংশীদার হতে পারে।

 সৌজন্য : মানবজমিন