শেয়ার বাজার

মাঠ পর্যায়ের তথ্যের ভিত্তিতেই বদলি ওসি-ইউএনওদের: ইসি

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: শনিবার, ২ ডিসেম্বর ২০২৩

মাঠ পর্যায়ের তথ্যের ভিত্তিতেই বদলি ওসি-ইউএনওদের: ইসি

দেশের সব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) মাঠ পর্যায়ের তথ্যের ভিত্তিতে বদলি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবালয়ের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ।

তিনি বলেন, মাঠ পর্যায়ের তথ্যের ভিত্তিতেই তাদের বদলির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বদলির কারণে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হবে না।

শনিবার (২ ডিসেম্বর) দুপুরে আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন অশোক কুমার দেবনাথ।

তিনি বলেন, নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া স্বতন্ত্রসহ সব প্রার্থীর নিরাপত্তায় ব্যবস্থা নিচ্ছে ইসি। ইসির ঘোষণা অনুযায়ী, আগামী ৭ জানুয়ারি সংসদ নির্বাচন হবে। তফসিল অনুযায়ী, সংসদ নির্বাচনের জন্য মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ৩০ নভেম্বর। মনোনয়নপত্র বাছাই হবে ১ থেকে ৪ ডিসেম্বর। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ১৭ ডিসেম্বর। প্রতীক বরাদ্দ ১৮ ডিসেম্বর।

Dummy Ad 1

আগামী ঈদের আগে এলএনজি সরবরাহ স্বাভাবিক হওয়ার সম্ভাবনা 

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ৩১ মার্চ, ২০২৪

আগামী ঈদের আগে এলএনজি সরবরাহ স্বাভাবিক হওয়ার সম্ভাবনা 

সংস্কার শেষে দেশে ফিরছে সামিটের মালিকানাধীন ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল। আগামী সোমবার মহেশখালীতে এই টার্মিনাল পৌঁছাবে। ঈদের আগেই যুক্ত হবে অপারেশনাল কাজে। এরমধ্য দিয়ে প্রায় ছয় মাস পর দেশে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) সরবরাহ স্বাভাবিক হওয়ার আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

সূত্র জানায়- আমদানি করা এলএনজি কার্গো মহেশখালীতে স্থাপন করা দুই ভাসমান টার্মিনাল দিয়েই খালাস করা হয়। এর একটি মার্কিন কোম্পানি এক্সিলারেট এনার্জির ‘এক্সিলেন্স’। অন্যটি দেশীয় সামিট প্রাইভেটের মালিকানাধীন ‘সামিট’। এ দুই টার্মিনালের রিগ্যাসিফিকেশন ক্যাপাসিটি দৈনিক ১ হাজার মিলিয়ন ঘনফুট।

গত ১ নভেম্বর সংস্কারের জন্য সিঙ্গাপুর পাঠানো হয় এক্সিলেন্স কে। এতে দুই টার্মিনালের একটি দিয়ে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। চট্টগ্রামসহ সারাদেশে তীব্র গ্যাস সংকট দেখা দেয়। রান্নায় ভোগান্তি, সিএনজি ফিলিং স্টেশনে যানবাহনের দীর্ঘ সারি, শিল্প-কারখানায় উৎপাদন বিঘœ ঘটতে শুরু করে।

এরমধ্যে গত ৭ জানুয়ারি সংস্কার শেষে মহেশখালীতে ফিরে এক্সিলেন্স। এরপর এই এলএনজি টার্মিনালের কমিশনিং শুরু হয়। ত্রুটি সারিয়ে গত ২২ জানুয়ারি থেকে এক্সিলেন্স টার্মিনাল দিয়ে ফের গ্যাস সরবরাহ শুরু হয়। তবে একই সময়ে সংস্কারের জন্য সামিটের টার্মিনাল সিঙ্গাপুর পাঠানোয় গ্যাস সংকট রয়ে যায়।

এলএনজি টার্মিনাল দুটির নিয়ন্ত্রক সংস্থা- রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাস কোম্পানি লিমিটেড (আরপিজিসিএল)। এই সংস্থার কর্মকর্তারা বলছেন- সামিটের টার্মিনালটি ফিরে এলে দুটি টার্মিনাল দিয়েই এলএনজি সরবরাহ শুরু করা যাবে। এতে জাতীয় গ্রিডে গ্যাসের সরবরাহ বাড়বে। গ্যাস সংকট কমবে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, গত ২২ জানুয়ারি সংস্কারের জন্য সিঙ্গাপুরের উদ্দেশ্যে মহেশখালী ছেড়ে যায় সামিটের টার্মিনাল। এরপর সিঙ্গাপুরের সিট্রিয়াম বেনোই ইয়ার্ডে এই টার্মিনালের ড্রাই-ডকিং কাজ শুরু হয়। কাজ শেষে গত ২৬ মার্চ এটি বাংলাদেশের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। আগামী ১ এপ্রিল এটি পৌঁছানোর কথা।

বিষয়টি নিশ্চিত করে আরপিজিসিএল’র উপ-মহাব্যবস্থাপক (এলএনজি) প্রকৌশলী মুহাম্মদ নাছির উদ্দীন বলেন, সামিটের টার্মিনাল আগামী ১ এপ্রিল দেশে পৌঁছালে ৬-৭ এপ্রিলের মধ্যে অপারেশনাল কাজে যুক্ত হওয়ার কথা। এরমধ্য দিয়ে দীর্ঘদিন পর দুটি টার্মিনালই চালু হতে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, এই মুহূর্তে এক্সিলেন্স টার্মিনাল দিয়ে প্রতিদিন ৬০০-৬৫০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা হচ্ছে। সামিটের টার্মিনাল অপারেশনাল কাজে যুক্ত হলে গ্যাস সরবরাহ প্রতিদিন ৯০০ মিলিয়ন ঘনফুট ছাড়িয়ে যাবে। যা গ্রীষ্ম মৌসুমে গ্যাসের তীব্র চাহিদা পূরণে সহায়ক হবে।

জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ বাড়লে পুরোপুরি এলএনজি নির্ভর চট্টগ্রামে গ্যাসের সংকট কমে আসবে বলে মনে করেন কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (কেজিডিসিএল) মহাব্যবস্থাপক (অপারেসন্স) প্রকৌশলী আমিনুর রহমান।

তিনি বলেন, এই মুহূর্তে আমরা দিনে ২৩৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস পাচ্ছি। দুটি টার্মিনাল চালু হলে যা ২৯০-৩০০ মিলিয়ন ঘনফুটে উন্নীত হবে বলে আশা করছি। এতে বিদ্যুৎ ও সার কারখানায় গ্যাস সরবরাহ বৃদ্ধি করা সম্ভব হবে।


কিশোর গ্যাং
দুইদিনে গ্রেফতার ৭৫ জামিনে সুপারিশ করলে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ০৬ মার্চ, ২০২৪

দুইদিনে গ্রেফতার ৭৫ জামিনে সুপারিশ করলে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা

রাজধানীর তেজগাঁও, গুলশান, উত্তরা ও মতিঝিল এলাকায় যৌথ অভিযান চালিয়ে গত দুদিনে ৭৫ কিশোর গ্যাং সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

ডিবি বলছে, কিশোর গ্যাংয়ের সঙ্গে বর্তমানে ধনীর সন্তানরাও জড়িয়ে যাচ্ছে। তারা মারামারিসহ হত্যার মতো ঘটনা ঘটাচ্ছে। কিশোর গ্যাংবিরোধী ধারাবাহিক অভিযান চলবে। তাদের জামিনের বিষয়ে কেউ সুপারিশ নিয়ে এলে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বুধবার (৬ মার্চ) রাজধানীর মিন্টো রোডে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ এসব কথা জানান।

তিনি বলেন, দুদিনে ৭৫ কিশোর গ্যাং সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কিশোর গ্যাংয়ের দৌরাত্বের কারণে সমাজের শান্তিশৃঙ্খলা নষ্ট হচ্ছে। কিশোর গ্যাং সদস্যরা ছিনতাই, ইভটিজিং, হুমকি দেওয়া, স্কুল-কলেজের ছাত্রীদের ভয় দেখানো ও বিভিন্ন সময়ে উত্তেজনা পরিস্থিত সৃষ্টি করে। এ কাজগুলো তারা দলবদ্ধ হয়ে করে। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় নানা নামে প্রভাব বিস্তার করে আসছে তারা।

রাজধানীর উত্তরা এলাকায় অভিযান চালিয়ে ইয়োং স্টার, বিগবস, ডিস্কো বয়েজ, বন্ধুমহল, শীল বিষু গ্যাং, পারভেজ গ্রুপ, রুস্তম গ্রুপ, ইয়োং স্টার গ্রুপ, নাইনএমএম গ্রুপ, নাইন স্টার গ্রুপ, রামপুরা এলাকায় অভিযান চালিয়ে উজ্জ্বল গ্রুপের সদস্যদের গ্রেফতার করা হয়েছে।

কিশোর গ্যাং গ্রুপগুলো মাদক, চাঁদাবাজিসহ নানা অপরাধ করে আসছে। তাদের কিছু বড় ভাইয়ের ছত্রচ্ছায়ায় এলাকায় আধিপত্য বিস্তার করে আসছে। এমনকি তারা চুরি-ছিনতাই করে আসছে। এসব কিশোর গ্যাংয়ের হামলায় গত দুই বছরে ৩৪ জন কিশোর নিহত হয়েছে।


হারুন অর রশীদ আরও বলেন, একসময় মনে করতাম ভাসমান ও নিম্ন আয়ের পরিবারের সন্তানরা কিশোর গ্যাং চক্রে জড়িত হচ্ছে। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে উচ্চ মাধ্যবিত্ত, ধনীদের আলালের ঘরে দুলালরাও কিশোর গ্যাং চক্রে জড়িয়ে যাচ্ছে। তাদের পোশাক, চুলের কাটিং চলাফেরা সবই ভীতিকর। এসব ধনীর সন্তানরা প্রথমে মাদকসেবন, পরে মাদক বিক্রিতেও জড়িয়ে যাচ্ছে। এছাড়া তারা এলাকায় স্থানীয় রাজনৈতিক বড় ভাই আবার কখনো কাউন্সিলরদের নিয়ন্ত্রণে থেকে তারা হত্যার মতো ঘটনা ঘটাচ্ছে। বর্তমান ও সাবেক কাউন্সিলরদের ছত্রচ্ছায়ার অভিযোগ রয়েছে। যার পরিপ্রেক্ষিতে দুদিন ৭৫ কিশোর গ্যাং সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। সবাই কিশোর গ্যাং চক্রে জড়িত থাকার কথা আমাদের কাছে স্বীকার করেছে।

কিশোর গ্যাং সামাজিক অবক্ষয়ের কারণ উল্লেখ করে ডিবিপ্রধান বলেন, এখন যে সামাজিক অবক্ষয় ঘটছে। এসব কিশোর স্কুলে পড়ালেখা বাদ দিয়ে মাদকসেবনের মতো উশৃঙ্খল জীবন-যাপন করছে। গোয়েন্দা পুলিশ কাজ করছে। তবে আমি মনে করি অভিভাকদের উচিত তার সন্তান কোথায় যায়, কার সঙ্গে মিশে তার খোঁজ রাখা। পাশাপাশি মা-বাবার উচিত সন্তানদের সময় দেওয়া। গ্রেফতার করে কিশোর গ্যাং দমন করা যাবে না। সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। সন্তানদের ধর্মীয় ও নৈতিক শিক্ষা দিতে হবে।

কিশোর গ্যাংয়ের আশ্রয় দেওয়া বড় ভাইদের পরিচয় প্রকাশ করা হবে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, বর্তমানে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের গ্রেফতার করেছি। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে অনেক বড় ভাইয়ের নাম পেয়েছি। এসব নাম তদন্ত করে দেখবো কারা কারা কিশোর গ্যাং সদস্যদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিচ্ছে। তবে আমি মনে করি এসব কিশোর গ্যাংয়ের নানা অপরাধ করার তথ্যতো কাউন্সিলররা জানেন।

হারুন অর রশীদ বলেন, কিশোর গ্যাং গ্রুপের সদস্যরা কিন্তু বড় বা রাজনৈতিক নেতাদের পরিচয় দিয়ে এলাকায় চাঁদাবাজি করে। মাদক ব্যবসাসহ নানা অপরাধ করে। কিশোর গ্যাংয়ের এমন দৌরাত্ম্যের কারণে কেউ প্রতিবাদ করার সাহস পায় না। পাশাপাশি স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা ও পরিবারের সদস্যদের কিশোর গ্যাং দমনে এগিয়ে আসতে হবে। কিশোর গ্যাংবিরোধী ধারাবাহিক অভিযান চলবে। এ বিষয়ে কেউ সুপারিশ নিয়ে এলে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


ডিজিটাল ভূমি জরিপ কিভাবে হবে? পুরনো জরিপ বাতিলের অর্থ কী?

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

ডিজিটাল ভূমি জরিপ কিভাবে হবে? পুরনো জরিপ বাতিলের অর্থ কী?

বাংলাদেশের ভূমি ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে ডিজিটাল জরিপ চালু করতে যাচ্ছে সরকার। ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী সংসদে মঙ্গলবার জানিয়েছেন, ডিজিটাল জরিপ কার্যকর হলে পুরনো জরিপ বাতিল হয়ে যাবে। এই ডিজিটাল জরিপ কিভাবে হবে? তাছাড়া পুরনো জরিপ বাতিল হয়ে যাবার অর্থ কী?

ভূমিমন্ত্রী দাবি করছেন, ডিজিটাল জরিপ কার্যকর হলে ভূমির মালিকানা সংক্রান্ত জটিলতা কমে আসবে। ফলে ভূমি নিয়ে মামলা-মোকদ্দমা ও হয়রানিও কমবে। ডিজিটাল পদ্ধতি বা ডিজিটাল যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে ভূমির জরিপ পরিচালনাকে ডিজিটাল সার্ভে বলা হচ্ছে। কর্মকর্তারা বলছেন, ডিজিটাল জরিপের মাধ্যমে খুব সহজেই জমি পরিমাপ করা যাবে এবং একই সাথে জমির মালিকানা ও মাপের স্বচ্ছতা নিশ্চিত হবে। এই অঞ্চলে প্রথম ভূমি জরিপ শুরু হয়েছিল ১৮৮৮ সালে কক্সবাজার জেলার রামু থেকে। ওই জরিপের নামকরণ করা হয় সিএস জরিপ। এই জরিপ শেষ হয় ১৯৪০ সালে দিনাজপুর জেলায়। এরপর ধাপে ধাপে আরএস, এসএ, পিএস এবং সবশেষ বিএস জরিপ সম্পন্ন হয়। পুরনো পদ্ধতির জরিপে ফিতা টেনে দিয়ে জমির মাপ নিয়ে ম্যাপ তৈরি করা হতো।বেশ কয়েকটি জরিপ পরিচালনার পরও ভূমির জটিলতা কাটেনি।

মঙ্গলবার সংসদে ‘ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার বিল, ২০২৩’ পাশের আলোচনায় অংশ নিয়ে ভূমিমন্ত্রী বলেন, ‘ডিজিটাল সার্ভে পর্যায়ক্রমে হবে, এগুলো আসবে। আর ইতোমধ্যে যে সমস্ত জরিপ হয়েছে সব বাতিল। এটা আমি সংসদে দাঁড়িয়ে নিশ্চিত করতে চাই।’ ফলে চলমান বিএস জরিপ যে অবস্থায় রয়েছে সেই অবস্থাতেই বাতিল হবে কী-না সে বিষয়টি মন্ত্রীর বক্তব্যে স্পষ্ট হয়নি। তবে ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদফতরের একজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তা বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন, যখন কোন জমির ডিজিটাল জরিপ সম্পন্ন হবে, তখন আগের জরিপ বাতিল হয়ে যাবে। ডিজিটাল জরিপ হওয়ার আগ পর্যন্ত যে জরিপ চলেছে সেটা বহাল থাকবে।

ইতোমধ্যে পটুয়াখালী ও বরগুনাতে ডিজিটাল জরিপের পাইলট প্রোগ্রাম চলছে। এছাড়া চট্টগ্রাম, রাজশাহী ও নারায়ণগঞ্জের সিটি কর্পোরেশন, মানিকগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ ও ধামরাইয়ে এই ডিজিটাল জরিপের কাজ চলছে বলে অধিদফতরের পক্ষ থেকে জানানো হয়। কর্মকর্তারা বলছেন, এটি সফল হলে এই জরিপের ওপর ভিত্তি করে সারা দেশে ডিজিটাল জরিপ কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে।

ভূমি মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সারা দেশে ডিজিটাল জরিপের সক্ষমতা অর্জনে গত বছর এক হাজার তিনশ কোটি টাকা ব্যয়ে ৫ বছর মেয়াদি ডিজিটাল সার্ভের উদ্যোগ নেয়া হয়। এ প্রকল্পের মাধ্যমে মূলত জমির মানচিত্র ও রেকর্ড সমন্বয় করা হবে। এতে ভূমি মালিক ওয়েবসাইটে গেলে ম্যাপ ও খতিয়ান দুটি একসাথে পেয়ে যাবেন। এজন্য ডিজিটাল ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট সফটওয়্যার প্রস্তুত করা হচ্ছে। সকল ডাটা ক্লাউড বেইজ সার্ভারে সংরক্ষণ করা হবে। জরিপ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ড্রোন উড়িয়ে জমির পূর্ণ ছবি ধারণ করা হবে। স্যাটেলাইট ইমেজিং-এর মাধ্যমে জমির অবস্থান ও মাপ নিশ্চিত করা হবে।

স্যাটেলাইট ইমেজ কিনে সেটা মৌজা ম্যাপের সাথে সমন্বয় করে ডিজিটাল ল্যান্ড জোনিং ম্যাপ তৈরি করা হবে। এর ফলে কৃষিজমি, জলাভূমি, পাহাড় ও বনভূমি রক্ষাসহ জমির পরিকল্পিত ব্যবহার করাও সম্ভব হবে। এছাড়া ইটিএস এর মাধ্যমে জমির নির্ভুল পরিমাপ করতে বা প্লট ভাগ করা হবে। প্লট টু প্লট জরিপ সম্পন্ন হলে সরকারি ও বেসরকারি মালিকানার তথ্যটি সহজেই জানা যাবে।এ ধরণের জরিপে জমির পরিমাণ, জমির আইলের দৈর্ঘ্য, প্রস্থ, আকার ইত্যাদির পুঙ্খানুপুঙ্খ মাপ সম্পর্কে জানা যাবে এবং পরিমাপে ভুল হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম থাকে। জরিপ অধিদপ্তর বলছে, একবার ডিজিটাল জরিপ সম্পন্ন হলে প্রাকৃতিক কারণে বড় ধরনের ভূমির বিচ্যুতি ছাড়া মাঠে গিয়ে বার বার জরিপ করার প্রয়োজন হবে না। একই সঙ্গে অনলাইনে মৌজা ম্যাপ ও খতিয়ান একসাথে পাওয়া যাবে।

ভূমি জরিপ অধিদপ্তর আশা করছে এতে ভূমি ব্যবস্থাপনার আমূল পরিবর্তন হবে, আদালতের মামলা কমবে, সরকারি রাজস্ব বৃদ্ধি পাবে এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

বর্তমানে ভূমি জরিপ কয়েকটি ধাপে সম্পন্ন হয়ে থাকে। সাধারণত কোন এলাকায় ডিজিটাল জরিপ শুরু করার আগে সেখানকার পত্র পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে না হলে মাইকিং করে এ বিষয়ে প্রচার প্রচারণা চালানো হয় এবং ব্যাপক জনসংযোগ করা হয়। এর মাধ্যমে মূলত সেখানকার জমির মালিকদের জানানো হয়। তারা যে নিজ নিজ জমির সীমানা চিহ্নিত করেন এবং জমির মালিকানার কাগজপত্র যেমন - দলিল, নামজারি ও খাজনা পরিশোধ কাগজপত্র হালনাগাদ অবস্থায় কাছে রাখেন। এর মাধ্যমে ওই ব্যক্তির জমির তথ্য যাচাই বাছাই করা হবে। কোন সমস্যা না থাকলে মালিকানার তথ্য অনলাইনে এন্ট্রি করা হবে। পুরনো পদ্ধতির জরিপে দেখা যেতো একটি খতিয়ানের একাধিক মালিক রয়েছে। ডিজিটাল পদ্ধতিতে সেই সুযোগ আর থাকছে না।